খেলার মাঠ রক্ষার দাবিতে গ্রামবাসী ও ইউএনও দ্বন্দ্বের জেরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও প্রকাশে সাংবাদিককে হুমকি দিয়ে আলোচনায় আসা ইউএনও মাহমুদা বেগমকে একদিনের ব্যবধানে চট্টগ্রাম বদলি করা হয়েছে।
জানা গেছে, বুধবার (২৪ আগস্ট) ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মো. খবিরুল আহসান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ইউএনওকে কেন্দুয়ার পাশের উপজেলা মদনে বদলি করা হয়েছিল। ঠিক এর একদিনের ব্যবধানে গত বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন-২ শাখার উপসচিব কে এম আল-আমীন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ইউএনওকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে পদায়ন করা হয়েছে।
শনিবার (২৭ আগস্ট) জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল খেলার মাঠের পাশে দখল হয়ে থাকা উদ্ধারকৃত জমিতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নির্মাণাধীন ঘরে শুক্রবার (১২ আগস্ট) আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে শনিবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় ইউএনও মাহমুদা বেগমের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনের একটি বক্তব্যের ভিডিও ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেছিলেন সাংবাদিক হুমায়ূন কবীর। তারপরই মোবাইল ফোনে ইউএনও সাংবাদিককে ‘হুমকি’ দেয়ার একটি অডিও রেকর্ড সবার নজরে আসে। এ নিয়ে সাংবাদিকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপর বিভিন্নভাবে এর প্রতিবাদ করেন সাংবাদিকরা।
সংবাদ সম্মেলনে ইউএনও মাহমুদা বেগম আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতাসহ কয়েকজনকে দোষারোপ করেন। এনএসআই, ডিজিএফআইয়ের গোয়েন্দা প্রতিবেদন থেকে তিনি এসব জেনেছেন বলে উল্লেখ করেন। সরকারি দল, বিরোধী দল সবাই মিলে ষড়যন্ত্র করেছে বলে দাবি করেন তিনি। এ ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে ইউনিয়নের বিরুদ্ধেই অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দিয়ে আটক করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
ইউএনওর ওই বক্তব্যের ভিডিও দৈনিক সংবাদ ও ডেইলি অবজারভারের উপজেলা প্রতিনিধি হুমায়ূন কবীর নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেন। পরে ইউএনও ওই সাংবাদিককে মামলায় জড়ানোর হুমকি দেন। পরে জেলা প্রশাসক এ নিয়ে সতর্ক করেন এবং পরে শোকজ করা হয়।
এলাকাবাসী, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ জানায়, বলাইশিমুল গ্রামের একটি মাঠে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। গ্রামের মানুষের একটি অংশ মাঠটি বেদখল হয়ে যাবে মর্মে মাঠ রক্ষার দাবি তুলে অন্য কোথায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের দাবি তোলেন।
অপরদিকে প্রশাসন দাবি করছে, বেদখল হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধার করে ঘর তৈরি করা হচ্ছে। মাঠের জায়গায় মাঠও থাকছে। বরং দীর্ঘদিন অরক্ষিত পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা মাঠের বাউন্ডারি করে দেয়া হচ্ছে। যাতে সুরক্ষিত থাকে খেলার মাঠ। ওই এলাকার গরিবরাই থাকবে।
এদিকে এই দ্বন্দ্বের মধ্যে নির্মাণকাজের প্রস্তুতি জেনে এলাকাবাসী মাঠ রক্ষার দাবিতে গত ২৮ মে মাঠেই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। পরের দিন ২৯ মে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, ইউএনও মাহমুদা বেগম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র আসাদুল হক ভূঁইয়া, ওসি আলী হোসেন মাঠে যান। আন্দোলনকারী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় করে মাঠের পূর্ব-উত্তর পাশে ঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন।
ওইদিনই জায়গাটির মাপ দিয়ে ঘর নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করেন তারা। পরদিন ৩০ মে একদিকে ঘর নির্মাণের জন্য ইট, বালুসহ অন্যান্য নির্মাণসামগ্রী পাঠিয়ে কাজ শুরু করা হয়। অপরদিকে মাঠ রক্ষার দাবি নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন আন্দোলনকারীরা।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।