ভারতের অন্য অনেক উইকেটের মতোই ইডেন গার্ডেনের উইকেটও এখন গতিময়, বাউন্সি। কিন্তু আজ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দেখা গেল সেই উইকেটই বাংলাদেশের বোলারদের দিকে বাড়িয়ে দিচ্ছে সাহায্যের হাত! উইকেটে বাউন্স নিচু, গতিও মন্থর। এসব কাজে লাগিয়ে টসে জিতে আগে ব্যাটিং করা ডাচদের ২২৯ রানে অলআউট করেছে বাংলাদেশ।
ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসের ব্যাট থেকে এসেছে সর্বোচ্চ ৬৮ রান। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে এমন উইকেটে প্রত্যাশিতভাবেই সবচেয়ে কার্যকরী হয়েছে মোস্তাফিজুর রহমানের বোলিং। ১০ ওভারে মাত্র ৩৬ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। ফিল্ডাররা ক্যাচ না ফেললে তাঁর উইকেটের সংখ্যাটা আরও বেশি হতে পারত। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন অন্য দুই পেসার তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম ও অফ স্পিনার শেখ মেহেদী হাসান।
পাওয়ার প্লেতে পেসাররা উইকেট এনে দেবে, অধিনায়কের চাওয়াটা এমনই থাকে সাধারণত। দুই ম্যাচ পর দলে ফেরা তাসকিন আহমেদ সে প্রত্যাশাই পূরণ করলেন নিজের প্রথম ওভারেই বিক্রম সিংকে আউট করে। ৯ বল খেলে ৩ রান করে আউট হওয়ায় অবশ্য বিক্রমের ভুলটাই বেশি। তাসকিনের ভালো লেংথের বলটাকে লেগের দিকে ঠেলে খেলতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড়। সাকিব মিড অফে সহজ ক্যাচটা নিলে প্রথম উইকেট হারায় ডাচরা। পরের ওভারে ম্যাক্স ও’ডাউডকে (০) আউট করেন নতুন বলে তাসকিনের সঙ্গী শরীফুল ইসলাম। কয়েকটি ইনসুইংয়ের পর একটি বেরিয়ে যাওয়া বলে স্লিপে ক্যাচ দেন ডাচ ওপেনার।
দুই ওপেনারের বিদায়েও অবশ্য নেদারল্যান্ডসের রানের গতি কমেনি। সেটা ওয়েসলি বারেসির কৃতিত্ব। তিনে নেমে ৪১ বলে ৪১ রানের দারুণ ইনিংস খেলেছেন তিনি। ইনিংসের ১৪তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের কাটার বুঝতে না পেরে কাভারে ক্যাচ দেন সাকিবের হাতে। পরের ওভারে সাকিবের বলে সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন কলিন অ্যাকারম্যান, ফাইন লেগে সেটা নেন মোস্তাফিজ। ১৫ ওভারও শেষ হয়নি, নেদারল্যান্ডস ৬৩ রান তুলতেই হারায় ৪ উইকেট।
সাকিব-মোস্তাফিজের জোড়া আঘাতের পর ক্রিজে আসেন ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস ও অলরাউন্ডার বাস ডি লিডি। দুজন মিলে ৪৪ রান যোগ করেন। ডি লিডি (১৭) তাসকিনের বলে কট বিহাইন্ড হলেও টিকে থাকেন এডওয়ার্ডস। আর এই এডওয়ার্ডসের ক্যাচই দুইবার ছেড়েছে বাংলাদেশ। মোস্তাফিজের করা ১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে গালিতে ক্যাচ ছাড়েন লিটন। এক বল পর একই ভুল করেন মুশফিক। তখনো ০ রানে এডওয়ার্ডস।
সেই এডওয়ার্ডসই শেষ পর্যন্ত ডাচদের ইনিংসের প্রাণভোমরা হয়ে ওঠেন। সিব্যান্ড এঙ্গেলব্রেখটের সঙ্গে জুটি গড়ে রান বাড়াতে থাকেন দলের। দুজনের জুটি ভাঙার সুযোগ আসে ৪৩তম ওভারে। মোস্তাফিজের কাটারে অফ সাইডে মারতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ তোলেন এঙ্গেলব্রেখট।
মিরাজ দৌড়ে বলের লাইনে গিয়েও ক্যাচ নিতে পারেননি। মোস্তাফিজের পরের ওভারে অবশ্য মিরাজের হাতেই ক্যাচ দেন এডওয়ার্ডস। মোস্তাফিজের কাটারে পয়েন্টে কাট শট খেলতে গিয়ে মিরাজের তালুবন্দী ডাচ অধিনায়ক। আউট হওয়ার আগে ৮৯ বলে ৬টি চারে ৬৮ রানের লড়াকু ইনিংসই খেলেছেন এডওয়ার্ডস। নেদারল্যান্ডসের রান তখন ৬ উইকেটে ১৮৫। সেখান থেকে লোগান ফন বিকের ১৬ বলে ২৩ রান ডাচদের নিয়ে যায় ২২৯ রানে।