চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ঢাকায় এসে নানাবিধ সাহায্যের জন্য অনুরোধ করার পরেও নতুন করে বেজিংয়ের কাছ থেকে কোনও ঋণ নিল না শেখ হাসিনার সরকার। বরং দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বললেন, দুই দেশ মিলে এশিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কী কী পদক্ষেপ করতে পারা যায়, তা ঠিক করা হোক। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মায়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়েও চিনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাহায্য চাইলেন হাসিনা, কিন্তু আপাতত কোনও সেতু বা বন্দর গড়ার জন্য ঋণ চাওয়ার পথে গেলেন না বিচক্ষন শেখ হাসিনা।
আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে দিল্লি সফর নির্ধারিত হয়েছে শেখ হাসিনার। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয় সূত্রের খবর, শুক্র ও শনিবার ওয়াংয়ের সফরসূচি চূড়ান্ত করে ঢাকার চীনা দূতাবাস ২৫ জুলাই তা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয়কে জানায়। সফরসূচী সম্পর্কে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, এই সময়ে তিনি কাম্বোডিয়া সফরে থাকায় ওয়াংয়ের সফর সম্ভব নয়, তা পিছোতে হবে। কিন্তু চীনা দূতাবাস জানিয়ে দেয়, ওয়াং ঢাকা ঘুরে উলানবাটোর যেতে চান। এই সফরের দিন ক্ষণ হেরফের করা সম্ভব নয়। মোমেন জানান, সফর অন্তত এক দিন পিছোলে তিনি রবিবারের বদলে শনিবার ঢাকা ফিরে আসতে পারেন। তা হলে রবিবার ওয়াংয়ের সঙ্গে বসা যেতে পারে।
শেষ পর্যন্ত তা-ই মেনে নেয় চীনা দূতাবাস। মোমেন জানান, ঢাকা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আপাদত কোনও ভাবেই চীনের কাছ থেকে নতুন করে ঋণ নেবে না। এর ফলে এ দিন দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠকে বসে ডজন দুয়েক বোঝাপড়া চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন, যার অধিকাংশই সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা সম্পর্কিত আদানপ্রদানের।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আকাশছোঁয়া হওয়ার চাপ বাংলাদেশের উপরেও পড়েছে। কিছু দেশ তেল কিনতে বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার খালি করে ফেলে বিপদে পড়ায় বাড়তি সতর্ক নিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার। এর আগে তারা কৃচ্ছ্বসাধন নীতি ঘোষণা করে জ্বালানি তেলের ব্যবহারে লাগাম দেওয়ার কৌশল নিয়েছে। এর পরে শনিবার এক ধাক্কায় পেট্রোপণ্যের দাম অনেকটা করে বাড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে তেল সংস্থাগুলির লোকসানের বোঝা কমার পাশাপাশি তেলের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার কমবে বলে জ্বালানি উপদেষ্টারা পরামর্শ দিয়েছেন সরকারকে।