প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টার নাটকীয়তা শেষে ঢাকায় অ্যামেরিকান দূতাবাস প্রাঙ্গণে আশ্রয় নেয়া বাংলাদেশের বরখাস্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া নিজের বাসায় ফিরে গেছেন।
স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে তিনি অ্যামেরিকান দূতাবাস ছেড়ে যান।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে তিনি স্ত্রী ও তিন মেয়েকে নিয়ে দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. শহিদুল্লাহ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে বাসায় ফিরে গেছেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলাচিঠি পাঠান নোবেল বিজয়ীসহ বিশ্বের ১৭৫ ব্যক্তিত্ব।
ওই খোলা চিঠির প্রতিবাদ জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি দেয়া হচ্ছে বলে সম্প্রতি সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন এমরান আহম্মদ।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ গত ৪ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকদের আরও বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে বিবৃতিত সই করার জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে।
তবে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিবৃতিতে তিনি সই করবেন না।
ড. ইউনূসকে ‘বিচারিক হয়রানি’ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এর পরদিন বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন,
‘তিনি (এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া) অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন ডিএজি (ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল)।
তিনি যদি সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন, তাহলে তাকে হয় পদত্যাগ করে কথা বলা উচিত অথবা অ্যাটর্নি জেনারেলের অনুমতি নিয়ে কথা বলা উচিত। তিনি সেটি করেননি।’
এরপর বৃহস্পতিবার ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ থেকে এমরান আহম্মদকে অব্যাহতি দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
আইমন্ত্রী আনিসুল হক শুক্রবার সকালে এমরান আহম্মদকে বরখাস্তের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
এ ঘটনা সংবাদমাধ্যমে আসার দিনই বিকেলে ঢাকায় অ্যামেরিকান দূতাবাস প্রাঙ্গণে সপরিবারে আশ্রয়ের জন্য যান ইমরান আহম্মদ।
দূতাবাসে অবস্থান নেয়ার পর সংবাদ মাধ্যমে একটি খুদে বার্তায় তিনি লেখেন,
‘আমি অ্যামিরিকান দূতাবাসে আজকে পুরো পরিবারসহ আশ্রয়ের জন্য বসে আছি। বাইরে পুলিশ।
আজকে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে…।
আমার ফেসবুক মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে গত ৪-৫ দিন ধরে অনবরত হুমকি দেয়া হচ্ছে।
‘এই সরকার ভালোবাসার প্রতিদান দেয় জেল দিয়ে। আমার আমেরিকার কোনো ভিসা নেই।
স্রেফ ৩টা ব্যাগে এক কাপড়ে আমার ৩ মেয়েসহ কোনোক্রমে বাসা থেকে বের হয়ে এখানে বসে আছি। দোয়া করবেন আমাদের জন্য।’
তবে শুক্রবার রাত ৮টা ২৩ মিনিটে একই সংবাদপত্রকে তিনি বলেন, ‘স্ত্রী ও ৩ মেয়েকে নিয়ে পুলিশের সহায়তায় আমি বাসায় ফিরে যাচ্ছি।
আমরা বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত অ্যামেরিকান দূতাবাসের অফিস চত্বরে অবস্থান করেছিলাম।
‘সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাকে ভয় না পাওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। আমি ভিসা পেতে অ্যামেরিকান দূতাবাসে যাইনি। হুমকি পাওয়ায় সেখানে গিয়েছিলাম।’