সাধারণত বাবা-মায়ের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে জমির মালিক হয় মানুষ। তাই প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পে নিজেদের স্থায়ী ঠিকানা পেয়ে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনাকেই তাদের বাবা-মা বলে মনে করছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাওয়া মানুষেরা।
আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘুরে সেখানে স্থায়ী ঠিকানা খুঁজে পাওয়া মানুষদের জীবন-জীবিকার আমূল বদলের গল্প শুনতে এই প্রতিবেদক ঘরে দেখেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রকল্প এলাকা। সেখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলার সময় তারা জানান, এখন তাদের বাবা-মায় উভয়েই প্রধানমন্ত্রী।
সেখানেরই এক ভূমিহীন ছিলেন আব্দুল কাদির মিয়া। জন্মেই জেনেছেন তার কোন ঠিকানা নেই। তাই ঘর পাওয়ার আনন্দে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে মুখে মুখে গান লিখেছেন।
নিজেই গেয়ে শোনালেন, আল্লাহ পাকের দয়া হলো শেখ হাসিনাকে বাঁচাইয়া রাখলো, তিনি দিছেন আমাদের মাথা গোঁজার ঠাই, তোরা দেখবিনি রে ভাই আমাদের আর কোনো চিন্তা নাই।
শুধু স্থায়ী ঠিকানাই নয়, একটি বাড়ি, একটি আশ্রয় বদলে দিয়েছে তাদের জীবন। নতুন অর্থ খুঁজে পেয়েছে যাপিত জীবনের। বদলে গেছে প্রকল্পের আশপাশের দৃশ্যপট। বাড়ির চারপাশে বেড়ে উঠছে সবুজ বেষ্টনি, পালা হচ্ছে গবাদি পশু। খোলা হয়েছে নিত্যপণ্যের দোকান।
তিনিসহ আখাউড়া উপজেলার চর নারায়নপুরে ঘর পেয়েছে ৫৯ টি পরিবার। এক বছরে সবুজের সমারোহে ভরিয়ে দিয়েছেন তাদের বাড়ির অঙ্গিনা। মৌসুমী সবজি ও দেশী ফলের গাছ বেড়ে উঠছে তাদের ঘরের পাশে।
ভাড়ার অটোচালক থেকে নিজে মালিক হয়েছেন শহিদ মিয়া ও সখিনা খাতুন। যে টাকা ভাড়া দিতেন সে টাকা ভবিষ্যতের জন্য সবাই মিলে সঞ্চয় করছেন।
অনেকে নিজেদের সুবিধা মতো ঘরের সাথে পাওয়া জমিতে নানা ধরণের স্থাপনাও তৈরি করে নিয়েছেন। কেউ দিয়েছেন মুদি দোকান।
মুজিব বর্ষে এখন পর্যন্ত আশ্রয়ন প্রকল্পে এক লাখ ১৮ হাজার মানুষ ঘর পেয়েছে। আরো ৫৬ হাজার মানুষের জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘর তৈরি হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার খাটিহাতা গ্রামে ঘর পেয়েছে ৪০ পরিবার। নিজের জমি ও ঘর হবে এমন স্বপ্ন কখনোই দেখনি ভাগ্য বিড়ম্বিত মানুষগুলো।
তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই তাদের। জানালেন, যে দায়িত্ব বাবা-মা পালন করে থাকে, সেই দায়িত্ব পালন করেছেন শেখ হাসিনা। এই ঋণ শোধ হবার নয়।
সেখানের আর এক গল্পের কথা বলতেই হয়। ১৮ বছর আগে ছাব্বির মিয়া তার স্ত্রী আমেনা বেগমের টাইফয়েড জ্বর থেকে প্যারালাইস হয়। শুরু হয় দীর্ঘ চিকিৎসা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদরের বড়বাড়ি ছান্দিয়ারা গ্রামের বাড়ি বিক্রি করে স্ত্রীর চিকিৎসা করান। সেই থেকে ভূমিহীন ছাব্বির মিয়া।
নিজের ঘর হওয়াতে কাঠ কাটার মতো কঠোর পরিশ্রম করলেও সুখ তাদের চোখে মুখে। জানালেন, শেখ হাসিনা বাপ, মা এর কাজ করেছে, উনিই আমাদের বাবা মা।