দেশে নিরাপত্তার হাল ফিরেছে। এই আশ্বাস দিয়ে আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়া সংখ্যালঘু হিন্দু, শিখদের ফিরে আসার বার্তা দিল সে দেশের তালেবান সরকার। দেশটি ‘আর্মি চিফ অব স্টাফ’-এর তরফে টুইট করে বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে আনন্দবাজারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।
ওই টুইটে বলা হয়েছে, গত ২৪ জুলাই এ বিষয়ে কাবুলের হিন্দু-শিখ কাউন্সিলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তালেবান পররাষ্ট্র মন্ত্রালয়ের ডিরেক্টর-জেনারেল মুল্লা আব্দুল ওয়াসি। সেখানে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে নেতাদের আশ্বস্ত করেন তিনি।
সরকারের বিবৃতি অনুযায়ী, ভবিষ্যৎ নিয়ে সংখ্যালঘু নেতারা আশাবাদী। গত মাসে কাবুলের কারতে পারওয়ান গুরুদ্বারে আইএস (কেপি) জঙ্গিদের হামলা রুখে দেয়ার জন্য তালেবান প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা।
গত ১৮ জুন সকালে ওই গুরুদ্বারে প্রার্থনার সময় হামলা চালায় আইএস জঙ্গিরা। তখন গুরুদ্বারের ভিতরে অন্তত ২৫-৩০ জন ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্তত ২০ জন পালিয়ে বেঁচেছিলেন। সে দিনের হামলায় গুরুদ্বারের রক্ষী আহমেদ-সহ এক শিখের মৃত্যু হয়।
তবে যথা সময়ে তালেবান নিরাপত্তারক্ষীরা এসে পড়ায় বড়সড় দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছে বলে দাবি সরকারের। ঘটনাটির মাস খানেক আগে এই গুরুদ্বারেই জঙ্গি হামলার আর একটি ঘটনা ঘটেছিল।
গত বছর অক্টোবরে সেখানে হামলার উদ্দেশে ১৫-২০ জন আততায়ী ঢুকে পড়ে। নিরাপত্তারক্ষীদের বেঁধে ফেলে হামলা চালায় তারা। তবে সে বার প্রাণহানি ঘটেনি।
এর আগে ২০২০ সালের মার্চে কাবুলের শ্রী গুরু হররাই সাহিব গুরুদ্বারে জঙ্গি হামলায় ২৭ জন শিখ নিহত হন। জখম হন অনেকে। সব ক্ষেত্রেই হামলার দায় নিয়েছিল আইএস (কেপি)।
আফগানিস্তানে সংখ্যালঘু শিখ সম্প্রদায় বার বার জঙ্গি হামলার নিশানায় থেকেছে। বিশেষ করে দেশে পালা বদলের পরে হামলার তীব্রতা বেড়েছে। নিরাপত্তার অভাবে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন তাদের অধিকাংশই।
সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা আঁটসাঁট করার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের দিকেও নজর দিয়েছে তালেবান সরকার। এছাড়া কাবুলের কারতে পারওয়ান গুরুদ্বারে নিহতদের পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে প্রশাসন। গুরুদ্বারে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রার্থনা ভবনের ক্ষতিগ্রস্ত অংশের পুনর্নিমাণে তালেবান সরকার ৭৫ লক্ষ আফগানি বরাদ্দ করেছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।