ঢাকাশুক্রবার , ১৪ অক্টোবর ২০২২
  1. #টপ৯
  2. #লিড
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. আন্দোলন
  7. ইচ্ছেডানা
  8. উদ্যোক্তা
  9. ক‌রোনা মহামা‌রি
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. চাকুরীর খবর
  15. জাতীয়
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জানা গেলো কারণ ,নোমান কেন যাননি সমাবেশে

দেশইনফো২৪.কম
অক্টোবর ১৪, ২০২২ ৮:৪৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বামপন্থী রাজনীতিবিদ থেকে আশির দশকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের হাত ধরে যোগ দেন দলটিতে। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে আছেন এই দলের সঙ্গেই। ছিলেন সংসদ সদস্য, মন্ত্রীও। তবে এখন দলটির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান তিনি। বলছি চট্টগ্রামে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম আবদুল্লাহ আল নোমানের কথা।

একসময় চট্টগ্রামে বিএনপির রাজনীতি মানেই ছিল আবদুল্লাহ আল নোমানের নেতৃত্ব। মহানগর-উত্তরে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কেন্দ্রীয়ভাবে যুবদল-শ্রমিকদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাকে ছাড়া চট্টগ্রামে বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচি, একসময় কল্পনাই করতে পারতেন না দলটির নেতাকর্মীরা। কিন্তু গত বুধবার (১২ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণসমাবেশে যাননি আবদুল্লাহ আল নোমান। নেতাকর্মীরা বলছেন, এই প্রথম চট্টগ্রামে বিএনপির বড় কোনো কর্মসূচিতে তিনি উপস্থিত থাকলেন। অথচ কেন্দ্র থেকে জেলা, মহানগরের শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় সব নেতা ছিলেন, শুধু ছিলেন না চট্টগ্রামে বিএনপির একসময়ের কাণ্ডারি নোমান।

তবে বিএনপির মহাসমাবেশের দুইদিন আগেই চট্টগ্রামে এসে নিজ সংসদীয় আসনে মহাসমাবেশের প্রস্তুতি সভা করে আবার ফিরে গেছেন ঢাকায়। সমাবেশে কেন নোমান অনুপস্থিত- এ নিয়ে আলোচনা আছে খোদ দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যেই।

জানা গেছে, সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির কোনোপর্যায়ে আবদুল্লাহ আল নোমানকে রাখা হয়নি। যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে প্রস্তুতি কমিটির পক্ষ থেকে তাকে মহাসমাবেশে যাবার আমন্ত্রণও করা হয়নি। এই ‘উপেক্ষার’ কারণে অভিমানী নোমান যাননি সমাবেশে। এমনকি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও ফোন করে অনুরোধ জানিয়ে তাকে সমাবেশে নিতে পারেননি।

তবে আবদুল্লাহ আল নোমান বলছেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি মহাসমাবেশে যেতে পারেননি। প্রস্তুতি কমিটিতে না রাখলেও নিজ উদ্যোগে তিনি সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেছেন প্রস্তুতি সভার মাধ্যমে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণসমাবেশের জন্য কেন্দ্র থেকে একটি প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে উপদেষ্টা করে টিম প্রধান করা হয়েছিল ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানকে। আর সমন্বয়কারী ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।

গত ১০ অক্টোবর আবদুল্লাহ আল নোমান চট্টগ্রামে এসে নিজ সংসদীয় আসন ডবলমুরিং-হালিশহর এলাকায় থানা ও ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের নিয়ে ‘প্রস্তুতি সমাবেশ’ করেন। সেই সমাবেশে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীনও অংশ নেন। গণসমাবেশের সমর্থনে প্রস্তুতি সমাবেশ করে রাতেই আবার তিনি ফিরে আসেন ঢাকায়।

ওই সমাবেশে উপস্থিত না থাকার বিষয়ে আবদুল্লাহ আল নোমান গণমাধ্যমকে বলেন, ’১০ তারিখ প্রোগ্রাম করার পর শরীরটা এত খারাপ হয়ে গেল যে, ঢাকায় চলে আসতে হলো। ১২ তারিখ আর যেতে পারলাম না। আর সুনির্দিষ্টভাবে আমার দায়িত্ব হচ্ছে ঢাকা বিভাগে। এটা দল থেকেই দিয়েছে। ডিসেম্বরে ঢাকায় সমাবেশ হবে। সেখানে আমার দায়িত্ব থাকবে।’

চট্টগ্রামের সমাবেশের জন্য দল থেকে কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে আমার দায়িত্ব সেভাবে না, সেখানে কমিটি করা হয়েছিল। আমীর খসরু, শাহজাহান সমন্বয়কারী-এভাবে কমিটি করা হয়েছিল। যেহেতু আমি কমিটিতে প্রধান দায়িত্বে ছিলাম না বা কোনো দায়িত্বেই ছিলাম না, আমি নিজের উদ্যোগে আমার নির্বাচনী এলাকায় মহাসমাবেশের সমর্থনে একটা সমাবেশ করেছি। সেখানে ফেস্টুন, ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, লিফলেট সব ১২ তারিখের মহাসমাবেশের সমর্থনে করা হয়েছিল। সবাইকে বলেছি-মহাসমাবেশ সফল করুন। আমি বলিনি যে, আমি থাকব না। কিন্তু শরীরের কারণে পারলাম না। ’

নোমান বলেন, ‘১০ তারিখ প্রস্তুতি সমাবেশ শেষ করে রাতে আবার নেতাকর্মীদের নিয়ে বসেছিলাম। ব্যানার বানানো হয়েছে। আমার ফটো দিয়ে এক হাজার গেঞ্জি বানানো হয়েছে। সেগুলো নিয়ে নেতাকর্মীরা সমাবেশে গেছেন। এর বেশি দায়িত্ব তো আমার ছিল না। ’

প্রস্তুতি কমিটির পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ’১০ তারিখ আমি সমাবেশ করলাম। রাতে তো চলে গেলাম। পরদিন ১১ তারিখ মহাসমাবেশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন ছিল। ওইদিন সকালে শামীম (মাহবুবের রহমান শামীম) আমাকে সংবাদ সম্মেলনে যাবার জন্য ফোন করেছিল। তখন আমি অলরেডি ঢাকায় চলে এসেছি। শামীম কিংবা অন্য কারো সাথে এর বেশি ডিটেইল কথা আমার হয়নি বা তারাও বলেনি। ’

ঘনিষ্ঠজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিজেকে ‘উপেক্ষিত’ ভাবছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বড় দল, কিছু সমস্যা তো থাকবেই। উপেক্ষিত মনে করছি না। এ ধরনের অনেক বড় বড় প্রোগ্রাম আমি আগে করেছি, ম্যাডামের (বেগম খালেদা জিয়া) সঙ্গে উনাকে রেখেই চট্টগ্রামে করেছি। ’

বুধবার সকালে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফোন করেছিলেন জানিয়ে নোমান বলেন, ‘মহাসচিব ঢাকা থেকে যাবার সময় ফোন করেছিলেন। বললেন-আপনি কোথায়। আমি বললাম- ঢাকায়। তখন বললেন যে, আপনি যাবেন না? আমি বললাম- শারীরিকভাবে সুস্থ না। মহাসচিব বললেন- আপনি না গেলে কেমনে হয়? আমি বললাম- হয়ে যাবে হয়ে যাবে, বড় মিটিংয়ে কে গেল, কে গেল না সেটা সবাই জানতে পারে পরে। মিটিং তো হয়েই যায়। মহাসচিব আর কোনো কথা বলেননি।’

কথোপকথনের শেষপর্যায়ে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘বড় বড় সমাবেশে লোকজন যোগান দেয়াটা বড় বিষয় না। মানুষ তো স্বতঃস্ফূর্তভাবেই এসেছে। রাস্তায় রাস্তায় জটলা ছিল শুনেছি। সরকার বিরোধী স্বতঃস্ফূর্ততা মানুষের মধ্যে বেড়ে যাচ্ছে। ফলে বিএনপির সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততাটা হয়ে গেছে। এখন সুষ্ঠু পরিকল্পনা করে সামনে এগিয়ে যাওয়াই হচ্ছে প্রধান লক্ষ্য। ’

সমাবেশে আমন্ত্রণ না জানানোর বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, ‘নোমান ভাইয়ের সঙ্গে আমার টেলিফোনে কয়েকবার কথা হয়েছে। সর্বশেষ উনাকে আমি সংবাদ সম্মেলনে আসার জন্যও ফোন করেছিলাম। উনি আসেননি সেটা ভিন্ন বিষয়। কিন্তু উনি দুইদিন আগে চট্টগ্রামে এসে সভা করেছেন। এরপর আবার কেন ঢাকায় চলে গেলেন, কেন সমাবেশে আসেননি সেটা আমি বলতে পারব না। আর নোমান ভাই সর্বজনশ্রদ্ধেয় নেতা। উনাকে অশ্রদ্ধা বা উপেক্ষা করার তো প্রশ্নই আসে না।’

জানা গেছে, ব্যবসায়ী সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ১৯৯১ সালে নোমানের হাত ধরেই বিএনপিতে যোগ দেন। নোমানের সমর্থন নিয়েই তিনি বন্দর আসন থেকে তিন দফা সাংসদ হন। সেই আমীর খসরু দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং নোমান ভাইস চেয়ারম্যান। সাংগঠনিক খসরুর নিচে অবস্থানকে অসম্মানজনক মনে করেন প্রবীণ নেতা নোমান।

ছাত্রজীবন শেষে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর হাত ধরে যোগ দেন শ্রমিক রাজনীতিতে। পূর্ব বাংলা শ্রমিক ফেডারেশনের সহসভাপতি ছিলেন। গোপনে ভাসানীপন্থী ন্যাপের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত হন। ১৯৭০ সালে তাকে ন্যাপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। যুদ্ধ শেষে আবারও ন্যাপের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন। জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠনের পর ১৯৮১ সালে যোগ দেন দলটিতে। চট্টগ্রামের রাউজান ও কোতোয়ালী আসন থেকে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। রাজনীতির বাইরেও তিনি চট্টগ্রামের মানুষের কাছে সর্বজনশ্রদ্ধেয়।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।