ঢাকাশুক্রবার , ২৮ এপ্রিল ২০২৩
  1. #টপ৯
  2. #লিড
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. আন্দোলন
  7. ইচ্ছেডানা
  8. উদ্যোক্তা
  9. ক‌রোনা মহামা‌রি
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. চাকুরীর খবর
  15. জাতীয়
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নিত্যপণ্যের বাজারে ফের ‘আগুন’

দেশইনফো২৪.কম
এপ্রিল ২৮, ২০২৩ ১১:৫০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রমজানের পুরো এক মাসজুড়ে রাজধানীর ঢাকার পণ্যের বাজার ‘বেশি দামে স্থিতিশীল’ থাকার পর আবার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। ঈদের দুই-তিন দিন আগে হুট করে বেড়ে যাওয়া ব্রয়লারসহ অন্যান্য মুরগির দাম এখনো কমেনি। রমজান মাসে ২১০ টাকা কেজি দরের ব্রয়লার এখন বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা দরে। ২৬০ টাকার সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪১০ থেকে ৪২০ টাকা কেজি দরে। স্বস্তি নেই সবজির বাজারও। ঈদের আগে বেড়ে যাওয়া গরুর গোশত ও চিনির দাম এখনো কমেনি। বরং ঈদের পরের কয়েক দিনে নতুন করে বেড়েছে আলু ও পেঁয়াজসহ কয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম। সবজি বাজারে দামে যেন ‘আগুন’ জ্বলছে। ঢাকার কাঁচাবাজারগুলোতে এখন সবজির দাম কেজিতে ৫০ থেকে ১৬০ টাকা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বাজার করতে আসা নি¤œ ও সীমিত আয়ের মানুষ। সংসারের খাবার খরচ চালাতে তারা হিমসীম খাচ্ছেন। অথচ দেখার যেন কেউ নেই।

রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজার যাদের দেখভাল করার কথা সেই ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর কয়েকটি দোকান ও মার্কেটে অভিযান চালানোর ভিডিও করে ইউটিউবে ছেড়ে দেয়ার মধ্যেই দায়িত্ব শেষ করছে। বিএসটিআই পণ্যের মান নিয়ে কোথাও কর্মতৎপরতা চালাচ্ছে এখন খবর শোনা যায় না। বাজার দেখার যেন কেউ নেই। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বাজারে নিয়ন্ত্রণ করা; কিন্তু বাণিজ্যমন্ত্রী কখনো ব্যবসায়ীদের কাছে আত্মসমর্পন করছেন, কখনো উষ্মা প্রকাশ করছেন কখনো স্ববিরোধী বক্তব্য দিয়েই দায়িত্ব পালন করছেন। অথচ বাজারে আগুনে পুড়ছে নি¤œ-মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ।

যাত্রাবাড়ি বাজার ও পুরান ঢাকার নয়াবাজারে একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমান দল বাজারে এসে প্রথমে সাংবাদিক ও ইউটিউবারদের ক্যামেরার খোঁজ করে। ক্যামেরা আসার পর তারা বিভিন্ন দোকানে অভিযান চালিয়ে কিছু জরিমান করেন। তারপর চলে যান। ক্যামেরা না থাকলে তারা কোনো দোকানে প্রবেশ করেন না।

বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি সরকারি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। যার কাজ সেবা ও পণ্যের গুণমান নিয়ন্ত্রণ। বিএসটিআই এর অনুমোদন ছাড়া বাধ্যতামূলক পণ্যসমূহ মোড়কজাত ও বাজারজাত করা আইনত দ-নীয় অপরাধ। কিন্তু গতকাল রাজধানীর একাধিক বাজারে অুনসন্ধান করে দেখা গেছে মোড়কজাত বেশির ভাগ পণ্যে বিএসটিআইয়ের সিল নেই। যাত্রাবাড়ির এক মিষ্টির দোকানদার জানান, তিনি বিএসটিআইয়ের নাম কোনোদিন শোনেননি।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর যাত্রবাড়ি পাইকারি বাজার, শনিরআখড়া, ফকিরেরপুল, কাপ্তান বাজার, যাত্রাবাড়ি মোড়ের কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, ঈদের পরে প্রথম সাপ্তাহিক ছুটির দিন সকালে বাজার করতে এসেছেন অনেক ক্রেতা। বিক্রেতাদের সঙ্গে দামাদামি করে কিনছেন শাক-সবজি, মাছ গোশতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। প্রতিটি পণ্যের দাম বেশি। দ্রব্যমূল্যের আকাশছোঁয়া দামের কারণে চাহিদার তুলনায় কম বাজার করে বাড়ি ফিরছেন ক্রেতারা। বাজারের মুরগি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০-২৭০ টাকা। এছাড়া সোনালী ৩৮০-৪১০ টাকা, লেয়ার ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা।
রমজানের আগে সিন্ডিকেট করে মুরগির বাচ্চা ও ব্রয়লার মুরগির দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে মাত্র ৫২ দিনে বড় উৎপাদকদের একটি চক্র ৯৩৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পোলট্রি খাতের উদ্যোক্তাদের অন্য একটি সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন এই অভিযোগ তুলেছিল। ওই সময় মুরগির দাম নিয়ে ‘বিগ ফোর’ হিসেবে পরিচিত চার প্রতিষ্ঠানকে তলব করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ওই চার কোম্পানি ব্রয়লার মুরগির দাম প্রায় ৪০ টাকা কমানোর সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ওই সময় এক মতবিনিময় সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, মুরগি ও গরুর গোশতের দাম না কমালে তা তারা বিদেশ থেকে আমদানি করার সুপারিশ করবেন।

ভুক্তোভোগীদের অভিযোগ, সরকারের যথাযথ মনিটরিং নেই বলেই ব্যবসায়ীরা এই সুযোগ নেয়। রমজানের আগে মুরগির দাম বেশি ছিল। দাম বাড়ার কারণ জানতে ভোক্তা অধিদপ্তর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধরার পর একদিনে কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম ১০০ টাকা কমে যায়। যথাযথ তদারকি থাকলে জিনিসপত্রের দামও কম থাকতো। এখন সেই তদারকি নেই, তাই দাম আর বেড়েছে।

শনির আখড়া বাজারে মিজানুর রহমান নামের একজন আইনজীবী জানান, তিনি প্রতি শুক্রবার সাপ্তাহের বাজার করেন। বাজারে প্রতিটি পণ্যের সরবরাহ পর্যাপ্ত। অথচ সবকিছ্রু দাম বেশি। মিষ্টি আলু ৭০ টাকা থেকে একশ টাকা কেজি করে বিক্রি হচ্ছে কল্পনা করা যায়! যে ব্রয়লার মুরগি তিন মাস আগে ১২০ টাকা কেজি ছিল সেই মুরগি ২৮০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। এক হালি লেজুর দাম ১০০ টাকা।

গতকাল কয়েকটি বাজারে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে ব্রয়লার ও মুরগির দাম বাড়লেও আগের মতোই আছে গরুর গোশত ও ডিমের দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি গরুর গোশত ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, খাসি ১১০০ টাকা ও ছাগল ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি লাল ডিম ৪৩ টাকা, সাদা ডিম ৪০ টাকা ও হাসের ডিম ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।স্বস্তি নেই মাছের বাজারেও। প্রতি কেজি বোয়াল মাছ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, চাষের পাবদা ৫০০ টাকা, চাষের টেংড়া ৭০০ টাকা, চাষের পুঁটি ৮০০ টাকা, ফলি মাছ ৭০০ টাকা, বাতাসী ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কোরাল ৭০০ টাকা, বাইলা ৮০০ টাকা, বাটা ৫০০ টাকা, চাষের কই ৩০০ টাকা, দেশি কই ১২০০ টাকা, মাগুর ৫০০ টাকা, শিং ৪০০ টাকা, রুই ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, রূপচাঁদা ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৭০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ১০০০ টাকা, পোয়া ৮০০ টাকা, তপসী ৭০০ টাকা, মলা ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, চাপিলা ৮০০ টাকা, ইলিশ ১৬০০ থেকে ২০০০ টাকা এবং কাচকি ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচাবাজার তথা সবজির বাজারে আগুন জ্বলছে। যাত্রাবাড়ি পাইকারী বাজারে পণ্যের দাম কিছুটা কম থাকলেও যাত্রাবাড়ি চৌরাস্তার খুচরা বাজার, শনির আখরা ও কাপ্তান বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা আম ৭০ থেকে ৮০ টাকা, মারফা ৯০ টাকা, ক্যাপসিক্যাম ২৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ থেকে ৭০ টাকা, গাজর ৮০ থেকে ৯০ টাকা, কাকরোল ১০০ থেকে ১১০ টাকা, কচুরমুখী ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, সজনে ডাটা (আঁটি) ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টি আলু ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ থেকে ১০০ টাকা, উস্তা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করোলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বরবটি ৯০ থেকে ১০০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ধুন্দুল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঝিঙ্গা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পটল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, আলু ৩০ থেকে ৩২ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, চাল কুমড়া (পিস) ৫০ থেকে ৬০ টাকা, সসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ফুলকপি (পিস) ৫০ টাকা, বাঁধাকপি (পিস) ৫০ টাকা, লাউ (পিস) ৬০, কাঁচা কলা (হালি) ৬০ টাকা, কলম্বো লেবু (হালি) ১০০ টাকা, কাগজি লেবু (হালি) ৪০ টাকা, এলাচি লেবু (হালি) ১০০ টাকা।
এদিকে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৭৪ টাকা, নাজিরশাইল ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, ইরি আটাশ ৬০ টাকা, পাইজাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, দেশি রসুন ১৬০ টাকা, চায়না রসুন ১৪০ টাকা, মিয়নমারের আদা ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে বাজার করতে ঘাম ছুটছে ক্রেতাদের। যাত্রাবাড়ি মোড়ের কাঁচাবাজারের একাধিক ব্যবসায়ীর বক্তব্য বেশি দামে ক্রয় কলে বেশি দামে বিক্রি করছি। তবে ক্রেতারা বলছেন, এক কেজি আলুতে ১০ টাকা, এক কেজি মিষ্টি আলুতে ২০ টাকা এবং এক কেজি সবজিদের ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত লাভ করছেন খুচরা বিক্রেতারা।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।