ঢাকাশনিবার , ৮ অক্টোবর ২০২২
  1. #টপ৯
  2. #লিড
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. আন্দোলন
  7. ইচ্ছেডানা
  8. উদ্যোক্তা
  9. ক‌রোনা মহামা‌রি
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. চাকুরীর খবর
  15. জাতীয়
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রোহিঙ্গা সংকট ও মিয়ানমারের অবনতিশীল পরিস্থিতি

দেশইনে‌ফো ডেস্ক।
অক্টোবর ৮, ২০২২ ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও মিয়ানমারের অনীহায় তাদের প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। মাঝে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানের পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। কিন্তু রাখাইনে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তুমুল লড়াইয়ের পরিপ্রেক্ষিতে আবার আন্তর্জাতিক মনোযোগের কেন্দ্রে এসেছে রোহিঙ্গা সংকট। রাখাইনে দুই পক্ষের সংঘাতের জেরে বাংলাদেশ সীমান্তে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা বাড়ছে।

বিশেষ করে গত আগস্ট মাস থেকে সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের বান্দরবানে মিয়ানমারের ছোড়া কামানের গোলা, রোহিঙ্গাদের হতাহত এবং সে দেশের সেনাবাহিনীর আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে এনেছে ঢাকা। বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ উপায়ে সীমান্তের পরিস্থিতি উন্নয়নের অনুরোধ জানালেও মিয়ানমার তাতে কান দেয়নি। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনাতেও বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের তিন মাস আগে ২০২০ সালের নভেম্বরে আরাকান আর্মির সঙ্গে এক অলিখিত অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করেছিল তাতমাদো নামে পরিচিত দেশটির সেনাবাহিনী। গত ৩১ আগস্ট মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের চৌকিতে আরাকান আর্মির হামলার মধ্য দিয়ে ওই অলিখিত অস্ত্রবিরতি ভেঙে যায়। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মংডুর কাছে আরাকান আর্মির ওই হামলায় অন্তত ১৯ জন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী প্রাণ হারান। পরে রাখাইন ও দক্ষিণে চিন রাজ্যে আরাকান আর্মির হামলায় কয়েকজন সেনাসদস্য হতাহত হন। রাখাইনের পাশাপাশি দক্ষিণে শান এবং উত্তরে সাগায়েংয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে তুমুল লড়াই চলছে আরাকান আর্মিসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক গোষ্ঠীর। অর্থাৎ সব মিলিয়ে মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রান্তে এখন সেনাবাহিনীকে বিরোধী পক্ষের তুমুল প্রতিরোধের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

মিয়ানমারের চলমান পরিস্থিতি রোহিঙ্গা সংকটের নতুন মাত্রা সামনে এনেছে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। গতকাল শুক্রবার সিঙ্গাপুরের গবেষণাপ্রতিষ্ঠান আইএসইএএস-ইউসুফ ইসহাক ইনস্টিটিউট আয়োজিত ‘মিয়ানমারের সংকটে আন্তর্জাতিক সাড়া: এরপর কী?’ শীর্ষক ওয়েবিনারে সাবেক মার্কিন কূটনীতিক ডেরেক মিচেল বলেছেন, মিয়ানমারের চলমান সংকটের কারণে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের একটি সুযোগ নতুন করে তৈরি হয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ পরিস্থিতির সুযোগ কাজে লাগানো উচিত।

মিয়ানমারে সাবেক রাষ্ট্রদূত ডেরেক মিচেলের মতে, মিয়ানমারের বর্তমান সংঘাতময় পরিস্থিতি পুরো ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। এমন এক পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের ওপর চীনের অব্যাহত প্রভাবটা উদ্বেগের। তবে মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রান্তে সামরিক জান্তাবিরোধী পক্ষ, জনগণ এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে দেশটির সেনাবাহিনীর অব্যাহতভাবে পর্যুদস্ত হওয়াটা ক্ষমতার ভারসাম্যে নতুন এক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, আসিয়ানসহ আন্তর্জাতিক নানা পক্ষের জাতীয় ঐক্য সরকারসহ (এনইউজি) বিরোধী পক্ষের সঙ্গে এখন থেকেই নানা স্তরে যোগাযোগ স্থাপনটা জরুরি।

অবনতিশীল দেশের তালিকায় মিয়ানমার

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি) মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে। ব্রাসেলসভিত্তিক এই আন্তর্জাতিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠানটি সেপ্টেম্বর মাসের সারা বিশ্বের সংঘাতের পরিস্থিতি বিশ্লেষণের পর মিয়ানমারকে অবনতিশীল দেশের তালিকায় রেখেছে।

প্রসঙ্গত, সারা বিশ্বে সংঘাত প্রতিরোধ এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির নীতি বিকাশের কাজে যুক্ত আইসিজি বলেছে, দুই বছর বিরতির পর রাখাইন রাজ্যে আবারও লড়াই শুরু হয়েছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ অন্যান্য অঞ্চলেও অব্যাহতভাবে সহিংস বিরোধিতার মুখে পড়ছে এবং শান্তিপূর্ণ ভিন্নমতাবলম্বীদেরও নিপীড়ন করছে।

মিয়ানমার নিয়ে গত বুধবার প্রকাশিত আইসিজির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, রাখাইন রাজ্যে সহিংস সংঘাত বেড়েছে। এতে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হামলার জেরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গুলি এসে পড়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। আগস্টের শেষের দিকে দক্ষিণাঞ্চলীয় চিন রাজ্যে ১০ সেনাকে হত্যার দাবি করেছে আরাকান আর্মি। এরপর গত ১ সেপ্টেম্বর চিন রাজ্যের পালেতওয়ায় দুই পক্ষের সংঘাতের খবর পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য, পালেতওয়া শহরের অবস্থান বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে।

ক্রমেই নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে সেনাবাহিনী

মানবাধিকার, শান্তি, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় মিয়ানমারের জনগণকে সহযোগিতায় কাজ করছে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের গ্রুপ স্পেশাল অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল ফর মিয়ানমার বা এসএসি–এম। গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এসএসি–এমের বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের ৩৩০টি টাউনশিপের (বাংলাদেশের উপজেলার সমকক্ষ) মাত্র ৭২টি এখন সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। অর্থাৎ শতকরা হিসেবে সারা দেশের মাত্র ২২ শতাংশ এখন মিয়ানমার সেনাদের হাতে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মিয়ানমারের পরিস্থিতি যতটা অবনতিশীল হয়ে উঠেছে, তা হুটহাট হয়েছে এমনটা ভাবার কারণ নেই। কারণ, জাতিসংঘ, আইসিজির আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা গত বছরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকেই মিয়ানমারের পরিস্থিতি যে খারাপের দিকে যাবে, সেই পূর্বাভাস দিয়েছিল। কিন্তু ’৬২ বা ’৮৮ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মতো মিয়ানমারের সামরিক সরকার এবার বিক্ষোভকারীদের দমিয়ে রাখতে পারেনি। এবারের সামরিক শাসকবিরোধী বামার তরুণ–তরুণীদের জলপাই সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শহর থেকে ছড়িয়ে পড়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে। মিয়ানমারের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে এ আন্দোলনে যুক্ত হয়ে আঞ্চলিক স্বাধীনতাকামীরাও এগোচ্ছে নিজেদের লক্ষ্য অর্জনে। সামরিক শাসনবিরোধী জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) কর্মীদের নেতৃত্বে তাদের সহযোগী সংগঠন পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) নামে ছোট ছোট গেরিলা দল অনেকগুলো টাউনশিপে গড়ে উঠছে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (বিআইপিএসএস) প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকারের নেতৃত্বাধীন পিডিএফের সঙ্গে মিলে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো তৎপরতা জোরদার করেছে। ফলে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। এনইউজি, পিডিএফ ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর মিলিত তৎপরতা মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায় পরিলক্ষিত হচ্ছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।