ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৪ মে ২০২৩
  1. #টপ৯
  2. #লিড
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. আন্দোলন
  7. ইচ্ছেডানা
  8. উদ্যোক্তা
  9. ক‌রোনা মহামা‌রি
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. চাকুরীর খবর
  15. জাতীয়

স্বপ্ন যাবে বাড়ি এ বছরই উদ্বোধন হবে ৩০০ ফুট সড়ক

দেশইনফো২৪.কম
মে ৪, ২০২৩ ১০:১৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার/ পথ দেব পাড়ি তোমার/ কাছে যাবো ফিরে বারে বার’ গীতিকার মিলন মাহমুদের লেখা এই গানটি টিভির বিজ্ঞাপনে প্রতিদিন প্রচার হয়। তবে বিজ্ঞাপনের ওই পণ্যের বিক্রি জন্য নয়, সত্যিই ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার’ মতোই ৩০০ ফুট নামে পরিচিত সড়ক। রাজধানীর কুড়িল ফ্লাইওভার পয়েন্ট থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত সাড়ে ১২ কিলোমিটার দৃষ্টিনন্দন এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি হবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় এক্সপ্রেসওয়ে।

পদ্মা সেতুর সংযোগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা বিমান বন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বিআরটি, ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়ক সবকিছুকেই ছাড়িয়ে যাবে ৩০০ ফুট মহাসড়ক। নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। যানজটের সড়ক-মহাসড়কে যাতায়াত করতে যারা অভ্যস্ত; উদ্বোধন হলেই ১৪ লেনের এই সড়ক ব্যবহারে তাদের মনে হবে ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার’ মতোই অনুভূতি। যারা ইউরোপ, আমেরিকার মহাসড়ক চলাচল করেছেন; তারা ঢাকার এই সড়কের বিভিন্ন লেন ব্যবহার করে সেই অনুভূতি উপভোগ করতে পারবেন। সড়ক ব্যবহারের সময় পশ্চিমের প্রগতি সরণি ও বিমান বন্দর সড়কের সঙ্গে পূর্বের ইস্টার্ন বাইপাসকে সংযুক্তকারী এই সড়কে পর্যটন তথা দর্শণীয় অনুভূতি অনুভব করবেন।

অত্যাধুনিক এই এক্সপ্রেসওয়েতে থাকবে না কোনো ধরনের স্টপওভার পয়েন্ট, সিগন্যালিং সাইন কিংবা অন্য কোনো প্রতিবন্ধকতা। ছোট, মাঝারি ও বড় সব ধরনের যানবাহন চলবে আপন গতিতে। এর নির্মাণকাজ শেষ হলে একটি গাড়ি ৬ থেকে ৭ মিনিটে বাধাহীনভাবে পার হবে সাড়ে ১২ কিলোমিটার পথ। ৩৯ কিলোমিটার হাঁটাপথ, চারটি ইউলুপ, খালের ওপর ১৩টি সেতু, ৪টি এক্সপ্রেসওয়ে পদচারী-সেতু (ফুটওভারব্রিজ) ও পাঁচটি সুøইসগেট। সড়কের নাম ৩০০ ফুট রাস্তা। এ নামেই সবার কাছে পরিচিত। কিন্তু প্রশস্ত সড়কটি রাজধানীর কুড়িল থেকে বালু নদ পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার অংশে তার নামের সার্থকতা ধরে রাখতে পারছে না। দুই পাশে ৬৫ ফুট কাটা পড়ছে এটি। তাতে ৩০০ ফুটের বদলে সড়কটির প্রশস্ততা কমে দাঁড়াবে ২৩৫ ফুট। বাদ যাবে দুই পাশের সার্ভিস সড়ক এবং সেই সঙ্গে আইল্যান্ড রয়েছে। পূর্বাচল উপ-শহর ভবিষ্যতে প্রায় ২০ লাখ মানুষের বসবাসের শহরে আধুনিক শহর হচ্ছে। ডুমনী এলাকায় সড়কের দক্ষিণ পাশটি ছোট ছোট লাল পতাকায় সজ্জিত। সেখানে বালু, নদীর-খালের মাছ ছাড়া না হলেও এখন থেকে খালগুলোতে মাছ ধরা শুরু করেছেন মাছ শিকারিরা। ইতোমধ্যে এ সড়কের পাশে গড়ে উঠছে রাজধানী ঢাকার আরেক শহর। যেখানে ২০-২৫ লাখ লোক বসবাস করতে পারবে। এ সড়ককে কেন্দ্র করে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন ১১১ তলা আইকনিক টাওয়ার, বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক বহুতল ভবনসহ পুরো শহরটি খাল ও কৃত্রিম লেক দিয়ে চলাচল শুরু হয়েছে। বন, ইকো পার্ক ও সবুজ চত্বর গড়ে উঠেছে। ফুটবল ও ক্রিকেটের জন্য আন্তর্জাতিক মানের পৃথক দু’টি স্টেডিয়ামও হচ্ছে। ৩০০ ফুটের পাশে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার হচ্ছে। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র মতিঝিল থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে পূর্বাচলে গড়ে তোলা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন আধুনিক সড়ক। নতুন শহরে বাসিন্দারা এবং সারাদেশের মানুষ চলাচল করতে পারবে এ সড়কে।

রাজধানীর কুড়িল ফ্লাইওভার পয়েন্ট থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত সাড়ে ১২ কিলোমিটার দৃষ্টিনন্দন এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এটি হবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় এক্সপ্রেসওয়ে। এই প্রকল্প ব্যয়ও আকাশচুম্বী; ১৪ হাজার কোটি টাকা। পশ্চিমের প্রগতি সরণি ও বিমান বন্দর সড়কের সঙ্গে পূর্বের ইস্টার্ন বাইপাসকে সংযুক্তকারী এই সড়ককে বলা হচ্ছে অন্যতম পর্যটন স্থাপনাও। ১৪ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পে এখন সাড়ে ৪ হাজার কর্মীর দিন-রাতের কর্মযজ্ঞে মুখর। আট লেনের এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে থাকছে ৬ লেনের সার্ভিসওয়ে এবং দুই পাশে ১০০ ফুটের পাড় বাঁধানো খাল। দৃষ্টিনন্দন পদচারী ব্রিজগুলো মূলত পর্যটকদের আকর্ষণ করবে।

রাজধানীর পশ্চিম-পূর্ব যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি পশ্চিমের জলাবদ্ধতা নিরসনের বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে এ প্রকল্পে। সংশোধিত প্রকল্পে তিনটি খাল যুক্ত করা হয়েছে। খাল তিনটি হয়ে গেলে নিকুঞ্জ-১, নিকুঞ্জ-২, জোয়ারসাহারা, সেনানিবাস, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কালাচাঁদপুর, কাওলা, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় আর জলাবদ্ধ হবে না। প্রথমে বর্ষা মৌসুমে নিকুঞ্জ, বারিধারা, বারিধারা ডিওএইচএস, জোয়ারসাহারা, সেনানিবাস, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কালাচাঁদপুর, কাওলা, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাসহ বিস্তীর্ণ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ১০০ ফুট খালটি খননের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। বাস্তবে শুধু ১০০ ফুট খাল দিয়ে বিশাল এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব নয়। তাই প্রকল্পের সঙ্গে নতুন করে ডুমনি, বোয়ালিয়া ও এডি-৮ খাল তিনটি যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে হোটেল লা মেরিডিয়ানের পেছনের এডি-৮ খালের সঙ্গে যুক্ত বোয়ালিয়া খাল। খাল দু’টির বড় অংশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় নতুন করে এগুলো খনন করা হবে। পূর্বাচল প্রকল্পের ওপর দিয়ে যাওয়া ৩০০ ফুট সড়কটি গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। ইতোমধ্যে টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, গাজীপুরসহ উত্তর দিক থেকে আসা সিলেট ও চট্টগ্রামগামী যানবাহন এই সড়ক ব্যবহার করছে। হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে যেসব যাত্রী সিলেট ও চট্টগ্রামের দিকে যান, তাদেরও অনেকে রাজধানীর প্রবেশ পথ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।

রাজধানীর কুড়িল থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত দৃষ্টিনন্দন ও অত্যাধুনিক আট লেন পূর্বাচল সড়কটির কাজ শেষ পর্যায়ে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাতে উদ্বোধন করতে পারেন, সেই লক্ষ্যে বাকি কাজগুলো জোরেশোরে সম্পন্ন করার চেষ্টা করছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। উদ্বোধনের পরপরই সড়কটি কিছু অংশ ভেঙে ফেলতে হবে। কারণ ওই সড়কের ঠিক মাঝ দিয়ে বসছে মেট্রোরেলের খুঁটি বা স্প্যান। ২০২৪-এর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে শুরু থেকে হতে পারে তা স্থাপনের কাজ। সড়কটিতে পড়েছে অনেক সেতু, আন্ডারপাস ও গ্রেড ইন্টারসেকশন। সেগুলোও ভাঙা পড়বে।

এ বিষয়ে বুয়েটের অধ্যাপক পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল হক ইনকিলাবকে বলেন, পূর্বাচল সড়কে স্প্যানগুলো বসাতে গেলে সড়কের মধ্যে থাকা সবকিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আধা কিলোমিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের আন্ডারপাসগুলো এড়িয়ে কোনোভাবেই মেট্রোরেলের স্প্যান বসানো ঠিক হয়নি। একটা পদ্ধতি থাকতে পারে সেটা হলো, কেবল বেজড এলিভেটেডওয়ে নির্মাণ। এটাতো অনেক ব্যয়বহুল। মেট্রোরেল চলাচলের জন্য অনেক কঠিনও। এখানে সমন্বয় ও জবাবদিহি না থাকার কারণে এসব হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন যে এটার অনুমোদন দিলো, তারা এটা বুঝল না। কারণ সেখানে পরিকল্পনাবিদ নেই। এতে সরকারের টাকা অপচয় হচ্ছে।

এ বিষয়ে সেন্টার ফর আরবান স্টাডির চেয়ারম্যান বিশিষ্ট নগর বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, ৩০০ ফুট সড়ক প্রশস্ত করার বদলে ছোট করাটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। পূর্বাচল উপ-শহর ভবিষ্যতে প্রায় ২০ লাখ মানুষের বসবাসের শহর হবে। সে মানুষগুলোর কী হবে? তাদের চলাচলের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। এটি আমাদের দৃষ্টনন্দন প্রকল্প।

এ প্রসঙ্গে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউকের) চেয়ারম্যান মো.আনিছুর রহমান মিঞা ইনকিলাবকে বলেন, ৩০০ ফুট সড়কটি বাংলাদেশের দৃষ্টি নন্দন প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প। এ প্রকল্পে কাজ প্রায় শেষ। আগামী বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। তিনি বলেন, বেসরকারি কোনো উন্নয়নকারীকে কোনো রকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। ইতোমধ্যে সবুজ বনায়নের কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় বিভিন্ন জাতের গাছ লাগানো হয়েছে।

গত ২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রথম পাতাল রেলের (এমআরটি-১ লাইন) নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। ওই রেলপথের বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত থাকবে ভূগর্ভে। আর রূপগঞ্জের পীতলগঞ্জ থেকে জোয়ারসাহারা নতুনবাজার পর্যন্ত রেলপথটি হবে পূর্বাচল ৩০০ ফুট সড়কের মাঝের বিভাজক বরাবর উপর দিয়ে তথা উড়ালপথ হিসেবে। সড়কটি তৈরিতে রাজউকের ব্যয় ধরা আছে ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। কাজ শেষে তা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১ হাজার ৫০০ কোটিতে। সড়কটিতে রয়েছে ১২টি সেতু, ছয়টি আন্ডারপাস (ভূগর্ভ দিয়ে পারাপার), পাঁচটি গ্রেড ইন্টারসেকশন (একাধিক মোড়ের সংযোগ) ও ছয়টি ফুট ওভারব্রিজ বা পথচারীর উড়াল সেতু। প্রতিটি আন্ডারপাসের নিচে তৈরি করা হয়েছে কংক্রিটের জলাধার ট্যাঙ্ক ও দু’টি পাম্পিং স্টেশন। রাস্তার মাঝ বরাবর মেট্রোরেলের খুঁটিগুলো বসালে এগুলো তো ভাঙা পড়বেই, রাস্তাটিও মারাত্মভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজউকের ভুল পরিকল্পনার খেসারত দিতে হবে।

পূর্বাচল নতুন শহর উন্নয়নের জন্য কুড়িল থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত সাড়ে ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ আট লেন সড়ক তৈরির প্রস্তাব ২০১৩ সালে একনেকে পাস হয়। পরে অর্থ স্বল্পতার কারণে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আট লেনের পরিবর্তে চার লেনের সিদ্ধান্ত হয়। ২০১৫ সালে ওই সড়কটির কাজ শেষ হয় বর্ধিত ৪২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার পরই পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনে রাস্তাটি সম্প্রসারণ, সার্ভিস রোড ও দুই পাশে ১০০ ফুট প্রশস্ত খাল খননসহ আরও অনেক কিছু সংযুক্ত করে নেওয়া হয় ৩০০ ফুট সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প। আগের প্রকল্পে মোট ৫ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ের পর নতুন সম্প্রসারিত প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৩২৯ কোটি টাকা। প্রকল্পটির বিস্তারিত লে-আউট, নকশা ইত্যাদি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধীন গবেষণা সংস্থা ব্যুরো অব রিসার্চ টেস্টিং অ্যান্ড কনসালটেশন (বিআরটিসি) সম্পাদন করছে। বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে সেনাবাহিনীর এসডব্লিউও (পশ্চিম)। প্রকল্পে ৩৯ কিলোমিটার হাঁটাপথ, চারটি ইউলুপ, খালের উপর ১৩টি সেতু, চারটি এক্সপ্রেসওয়ে পদচারী সেতু (ফুটওভারব্রিজ) ও পাঁচটি সুøইসগেট রয়েছে।

কর্মকর্তারা জানান, সড়কের মাঝে ৪ মিটার (১ মিটার=৩.২৮ ফুট) প্রশস্ত মিডিয়ান বা বিভাজক রাখা হয়েছে মেট্রো রেলের খুঁটি বসানোর জন্য। একেকটি খুঁটি বসাতে যে ভারি যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হয়, তা ওই জায়গার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। যন্ত্রগুলো ব্যবহারে অন্তত ৩ হাজার ৬০০ বর্গফুটের বর্গাকার সমতল জায়গা প্রয়োজন। তাতে খুঁটি বসানোর সময় ৬০ ফুট রাস্তাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া ব্রিজ, আন্ডারপাস ও গ্রেড ইন্টারসেকশনের জায়গাগুলোতে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ কীভাবে খুঁটি বসাবে, তা এখনও অনিশ্চিত। ফলে অনেক কিছুই ভাঙা পড়বে।
রাজউক সূত্রে জানা যায়, পূর্বাচল সড়কে ৪৫০ থেকে ৫৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের প্রতিটি অন্ডারপাস, নিচে জলাধার পাম্প স্টেশন, উপরে গ্রেড ইন্টারসেকশন, সব কংক্রিটের তৈরি। যেগুলোর প্রতিটিতে ব্যয় হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ কোটি টাকা। এসব কংক্রিটের স্থাপনা কেটে কীভাবে মেট্রোরেলের খুঁটি বসানো হবে, তা কারও কাছেই বোধগম্য নয়। স্প্যান বসানোর পাইলিংই কীভাবে করা হবে, তাও একটি বড় প্রশ্ন।

পূর্বাচলে প্রথম তৈরি ৩০০ ফুট সড়ক প্রকল্পের কনসালট্যান্ট বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, পূর্বাচল সড়কে থাকা গ্রেড ইন্টারসেকশন গুলোর দৈর্ঘ্য ৪০০-৫০০ মিটার। অথচ মেট্রোরেলের একটি স্প্যান থেকে আরেকটি স্প্যানের দূরত্ব হতে পারে ১৫০ মিটার। কাজেই গ্রেড ইন্টারসেকশন গুলো ভাঙা পড়বেই। আর আন্ডারপাসগুলোকে অক্ষত রেখে কীভাবে সেখানে স্প্যান বসাবে, প্রকৌশলী হিসেবে তার কাছেও বোধগম্য নয়। মেট্রোরেলের কাজ শেষে আবারও এসব নতুন করে তৈরি করা ছাড়া কোনো বিকল্প থাকবে না। তিনি বলেন, প্রথম তৈরি করা চার লেনের রাস্তাটির স্থায়িত্ব ধরা হয়েছিল ২০ থেকে ২৫ বছর। ওই রাস্তাটিই চলতে পারত, উচিত ছিল মেট্রোরেল তৈরির পর পরবর্তী সম্প্রসারিত পরিকল্পনার বাস্তবায়ন।

পূর্বাচল সম্প্রসারিত রাস্তার প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এহসান জামিল ইনকিলাবকে বলেন, এ সমস্যাগুলো নিয়ে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে। আমরা সেখানে বলেছি, পূর্বাচল থেকে জোয়ারসাহারা অংশও মাটির নিচ দিয়ে নেওয়া যায় কিনা। তারা সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে বলেছে। এখন আর নকশা পরিবর্তনের সুযোগ নেই। ৫৫০ মিটার দীর্ঘ দূরত্বে মেট্রোরেলের স্প্যান বসানো সম্ভব। তা না হলে রাস্তার তো ক্ষতি হবেই, পাশের জমিরও ক্ষতি হবে।

এমআরটি লাইন-১-এর প্রকল্প পরিচালক আবুল কাশেম জানান, বালু নদীর ব্রিজে সমস্যা হতে পারে। সে জন্য সেখানে ১৭০ মিটার দূরত্বে স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা আছে। আর কোথাও কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু সাড়ে পাঁচশ মিটার লম্বা আন্ডারপাস থাকলে তাদের কনসালট্যান্ট এভাবে করল কেন? আমাদের তো এখন আর মেট্রোর নকশায় পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। ভূগর্ভে রেললাইন তৈরিতে খরচ অনেক বেশি। সরকার তো এসব দেখেই প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পাতাল রেলের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করার পর পীতলগঞ্জ ডিপো এলাকার কাজ শুরু হয়ে গেছে।

রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মনিরুল হক ইনকিলাবকে বলেন, যাতে মেট্রোরেলটা মাটির নিচ দিয়ে যায় এবং সড়কটি যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। কিন্তু কাজ হয়নি। আর সম্প্রসারিত সড়ক প্রকল্পের কনসালট্যান্ট ছিল ডাটা এক্সপার্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তারা কেন এমন সমন্বয়হীন ডিজাইন করল, প্রশ্ন রাখেন তিনি।

ডাটা এক্সপার্টের পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের ডিজাইনের কাজ শেষ। এমআরটি কর্তৃপক্ষ এটা মাথায় রেখে ডিজাইন করলে সমস্যা হবে না। যেখানে আন্ডারপাস, সেখানেও তো মিডিয়ান আছে। আর আমরা যখন ডিজাইন করেছি, তখন তো এমআরটির ডিজাইন হয়নি। কিশোরগঞ্জ থেকে আসা মাছ শিকারি হেলাল ও সেলিম বললেন, পুরাতন বালু নদীতে আমরা অনেক মাছ ধরেছিলাম। এখন খালগুলো সুন্দর হয়েছে। পানি প্রবাহ রয়েছে। মাছ ছাড়ছে কি না জানি না। তবে গত কয়েকদিন ধরে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করছি। মাছ ধরা পড়ছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।