পর পর তিনবার সরকারের দায়িত্বে প্রবীনদল আওয়ামী লীগ। সুসংগঠিত একটি দলকে দলের অভ্যন্তরে থাকা ধান্ধ্যাবাজরা দল ও দলের ভাবমূর্তি ধ্বংশ করতে উঠে পরে লেগেছে।
জাতির জনক হত্যার পর খুনী সরকারের মন্ত্রীসভায় দেখা গিয়েছিলো আওয়ামী লীগ নেতাদেরই এবং আওয়ামী লীগে পলিটিক্স নাই শুধু তেলবাজি এইটাও একটা মিথ। দুইটাই আছে। তেল মারা হয় উপরে উঠতে, আর পলিটিক্স করা হয় প্রতিপক্ষকে দাবিয়ে রাখতে।
এমন কোনো জায়গা নাই যেইখানে আওয়ামী লীগের গ্রুপিং নাই। সবখানে প্রেসিডেন্ট সাধারণ সম্পাদক দুই গ্রুপ। প্রেসিডেন্ট ভাবে ওকে আর উঠতে দিবে না, আর সাধারণ সম্পাদক ভাবে প্রেসিডেন্টকে সরিয়ে দিতে হবে। এভাবে নিজেদের স্বার্থের জন্য দলে ঢুকে পরে হাইব্রিড জামাত শিবির বিএনপির লোকজন। পোড় খাওয়া তৃণমূল নেতা কর্মীদের বঞ্চিত করে দলভারী রাখতে এদেরই দেখা যায় বিভিন্ন পোস্টে মনোনয়ন দিতে।
এখন তো সারাদেশে সবাই আওয়ামী লীগ। ফেসবুক খুললেই বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনার কাভার, বায়োতে লেখা মুজিব সৈনিক। আবার দেখা যায় দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মুক্তিও দাবি করে। আজহারীর ওয়াজের ভক্ত, শেয়ার দেয়। এই ধান্দালীগারদের দায় কার উপর বর্তায়? স্বাধীনতা আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন বলতে ছিলো হাতে গোনা কয়টার নাম। কিন্তু সব ছাপিয়ে গত কয়েক বছরে মুজিব-হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের ব্যানারে অবৈধ আত্মোপ্রকাশ প্রায় শতাধিক নামধারী লীগার সংগঠন।
কোন ধরনের দলীয় অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে সারা দেশজুড়ে আওয়ামী লীগের ব্যানারে চলছে লীগের বাণিজ্য। এযেনো আওয়ামী লীগ গ্রুপ অব ইন্ডাষ্ট্রি! একটু চোখ বুলিয়ে দেখে নেই এই গ্রুপ অব ইন্ডাষ্ট্রিতে টনকে টন লীগার প্রোডাক্টদের তালিকা:
জননেত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় লীগ, জননেত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় সংসদ, আওয়ামী প্রচার লীগ, আওয়ামী সমবায় লীগ, আওয়ামী তৃণমূল লীগ, আওয়ামী ছিন্নমূল হর্কাস লীগ, আওয়ামী মোটরচালক লীগ, আওয়ামী তরুণ লীগ, আওয়ামী রিক্সা মালকি-শ্রমিক ঐক্য লীগ, আওয়ামী যুব হর্কাস লীগ, আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ আওয়ামী পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা লীগ, আওয়ামী পরিবহন শ্রমিক লীগ, আওয়ামী নৌকার মাঝি শ্রমিক লীগ, আওয়ামী ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী লীগ, আওয়ামী যুব সাংস্কৃতকি জোট, বঙ্গবন্ধুর আর্দশ ও চেতনা গবেষণা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ, বঙ্গবন্ধু কলম সৈনিক লীগ, বঙ্গবন্ধু একাডেমি, বঙ্গবন্ধু নাগরিক সংহতি পরষিদ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, বঙ্গবন্ধু লেখক লীগ, বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগ, বঙ্গবন্ধু যুব পরিষদ, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ, বঙ্গবন্ধু বাস্তুহারা লীগ, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী হকার্স ফেডারেশন, বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারা বাস্তবায়ন পরিষদ, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু গ্রাম ডাক্তার পরিষদ, বঙ্গবন্ধু নাগরিক সংহতি পরিষদ, বঙ্গবন্ধু লেখক লীগ, বঙ্গবন্ধু গবষেণা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু আদর্শ পরিষদ, আমরা মুজিব সেনা, আমরা মুজিব হবো, চেতনায় মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সৈনিক লীগ, মুক্তিযোদ্ধা তরুণ লীগ, নৌকার সমর্থক গোষ্ঠী, দেশীয় চিকিৎসক লীগ, ছিন্নমূল মৎস্যজীবী লীগ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী লীগ, নৌকার নতুন প্রজন্ম, ডিজিটাল ছাত্রলীগ, ডিজিটাল আওয়ামী প্রজন্ম লীগ, ডিজিটাল আওয়ামী ওলামা লীগ, বাংলাদশে আওয়ামী পর্যটন লীগ, ঠিকানা বাংলাদেশ, জনতার প্রত্যাশা, রাসেল মেমোরিয়াল একাডেমি, জননেত্রী পরষিদ,
দেশরত্ন পরিষদ, বঙ্গমাতা পরিষদ, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব পরিষদ, আমরা নৌকার প্রজন্ম, আওয়ামী শিশু যুবক সাংস্কৃতিক জোট, তৃণমূল লীগ, একুশে আগস্ট ঘাতক নির্মূল কমিটি, আওয়ামী প্রচার লীগ, সজীব ওয়াজেদ জয় লীগ, বাংলাদেশ তথ্য-প্রযুক্তি লীগ, আওয়ামী শিশু লীগ, আওয়ামী তৃণমূল লীগ, আওয়ামী তরুণ প্রজন্ম লীগ, আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ, বাংলাদেশ জনসেবা লীগ, বাংলাদেশ আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ, জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদ, আওয়ামী নবীন লীগ।
সে সাথে ফেসবুক লীগ ও প্রতি পদক্ষেপে সহমত লীগ তো আছেই। প্রতিটি তথাকথিত নামধারী লীগার তাদের সাইবোর্ড ব্যবহার করে চালিয়ে যাচ্ছে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সরকারী জায়গা দখল করে দলীয় ক্লাববাজী। এসব ধান্ধ্যাবাজদের জন্য সাধারন জনগনের কাছে সমালোচিত হচ্ছে মূল আওয়ামী লীগ ও তার বৈধ কয়টি অঙ্গ সংগঠন।
দেশে যেন লীগের অভাব। তাদের ভাবনায় তৃণমূলের সব কর্মী মনে হয় মূর্খ, বস্তি থেকে উঠে আসা, তাই নেতা বানানো হয় না।
অবস্থা যা হয়েছে কালকে যদি গোলাম আজমের নাতি এসে আওয়ামী লীগে ঢুকে নিশ্চিৎ ভালো পদ পাবে। দল বোধকরি তাকেও বুকে টেনে নিবে। কারণ আওয়ামী লীগ উদার গণতান্ত্রিক দল। কাউকে না করতে পারে না। আজ এগুলো দেখার কেউ নেই, কারন দেখার জন্য তৃণমূল ও পোড় খাওয়াদের বীপরিত স্রোতে ভাসিয়ে দিয়েছে দলের ভিতর থাকা আওয়ামী ধান্ধ্যাবাজরা।