হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমসের গুদাম থেকে সাড়ে ৫৫ কেজি স্বর্ণ উধাওয়ের ঘটনায় চার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে আটক করেছে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার তাদেরকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সরকারি গুদাম থেকে স্বর্ণ উধাও নিয়ে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে এদিন কাজ শুরু করেছে ঢাকা কাস্টমস হাউজের তদন্ত কমিটি।
এ ঘটনায় মামলার পর মাঠে নেমেছে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশও। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে গেছেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য।
পুলিশের তরফে বলা হচ্ছে, এটি মোটেও চুরি নয়।
শুল্ক কর্তৃপক্ষের কেউ এগুলো সুকৌশলে আত্মসাৎ করেছে।
সন্দেহের প্রাথমিক তালিকায় আছেন, গুদামে কর্মরত চারজন সিপাহি ও চারজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা।
একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, ৪২৬টি প্যাকেজ থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের শুল্ক গুদাম থেকে অল্প অল্প করে স্বর্ণ গায়েব করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৫৫ কেজি।
২০২০ সালে জব্দ হওয়া স্বর্ণ কেন তিন বছর ধরে বিমানবন্দরে পড়ে থাকবে তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
বিপুল পরিমাণ এই স্বর্ণ উধাওয়ের ঘটনা সামনে আসে রোববার।
বিমানবন্দর থানায় দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, সংরক্ষিত এলাকায় থেকে চুরি হওয়া প্রায় অসম্ভব।
তাই এটি চুরি নাকি ভেতরের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা আত্মসাৎ করেছে তা নিশ্চিত না।
সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা কাস্টমস হাউজের উপ-কমিশনার সৈয়দ মোকাদ্দেস হোসেন।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড গুদামের পাশেই শুল্ক বিভাগে ট্রানজিট গুদাম।
এই গুদামে রাখা হয় জব্দ করা মালামাল। গুদামের ভেতরেই স্বর্ণের মতো মূল্যবান জিনিস রাখার জন্য আছে আলাদা ব্যবস্থা।
পুলিশ বলছে, এই গুদামে বাইরে থেকে চোর ঢোকার কোনো সুযোগই নেই।
যে আলমারি ভাঙা হয়েছে তা বাইরের কেউ করেনি।
আর স্বর্ণ গায়েব হয়েছে ৪২৬টি প্যাকেজ থেকে অল্প অল্প করে। চোর কখনো এভাবে করবে চুরি না। তাই অপরাধী শুল্ক বিভাগের মধ্যেই আছে।
শুল্ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগস্টের প্রথম সপ্তাহে গুদামের দায়িত্বে থাকা দুজন কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম সাহেদ ও শহিদুল ইসলামের বদলি হয়ে যায়।
তাদের জায়গায় যারা এসেছেন, তাদেরকে সব মালামাল বুঝিয়ে দেবার সময় স্বর্ণের একটি চালানের পুরো প্যাকেটই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
‘পরে তাদেরকে চাপ প্রয়োগ করার পর প্যাকেটটি তারা বের করেন।
বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পুরো গুদামের ইনভেন্টরি করার আদেশ দেন এবং গুদাম অটোমেশন করার কাজ শুরু হয়।
শুল্ক বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ২১ আগস্ট এই দুই কর্মকর্তাকে মালামাল বুঝিয়ে না দেয়া পর্যন্ত বদলির আদেশ স্থগিত করা হয়।
পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় মালামালের ইনভেন্টরি। ওই দিন রাত ৯টা পর্যন্ত গুদামে দুইটি দল কাজ করেছে।