ঢাকারবিবার , ৫ নভেম্বর ২০২৩
  1. #টপ৯
  2. #লিড
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. আন্দোলন
  7. ইচ্ছেডানা
  8. উদ্যোক্তা
  9. ক‌রোনা মহামা‌রি
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. চাকুরীর খবর
  15. জাতীয়
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো ১০ বিমান সংস্থা

দেশইনফো২৪.কম
নভেম্বর ৫, ২০২৩ ১১:২১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আর্থিক সংকট এবং নানা কারণে বেসামরিক বিমান চলাচল বিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলো অস্থিতিশীল। বিশেষ করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তা বেশ প্রকট। কিন্তু প্রথম দিকের বাণিজ্যিক কিছু পথপ্রদর্শক বিমান সংস্থা বিস্ময়করভাবে এখনো তাদের আদি ফরমে টিকে আছে। এর মধ্যে ফিনল্যান্ডের পতাকাবাহী ফিনএয়ার ১লা নভেম্বর তার শততম বার্ষিকী উদ্যাপন করেছে। সামুদ্রিক জাহাজ সার্ভিস হিসেবে ১৯২৩ সালে এটি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। এখানে বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো ১০টি বিমান সংস্থার বর্তমান অবস্থা তুলে ধরা হলো।

কেএলএম: এই বিমান সংস্থা প্রতিষ্ঠা হয় ১৯১৯ সালে। প্রথম ফ্লাইট শুরু করে ১৯২০ সালের মে মাসে। প্রথম বছরে তারা ৪৪০ জন যাত্রী পরিবহন করে। ২০২২ সাল পর্যন্ত যাত্রীর এই সংখ্যা ২ কোটি ৫৮ লাখ। এটি একটি ডাচ বিমান সংস্থা।

যখন এই বিমান সংস্থা চালু হয় তখন বর্তমানের আমস্টার্ডাম পরিচিত ছিল ডাচ্ ইস্ট ইন্ডিস নামে। সেই আমস্টার্ডামের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখে কেএলএম। এর প্রথম ফ্লাইটটি চালু হয় চার সিটের ডি হ্যাভিল্যান্ড ডিএইচ.১৬ বিমান দিয়ে।

উদ্বোধনী ফ্লাইট বর্তমানে অকার্যকর লন্ডনের ক্রাইডন বিমানবন্দরে এসেছিল। ১৯২৪ সালে কেএলএম আমস্টার্ডাম থেকে বাতাভিয়া (বর্তমানের জাকার্ত) পর্যন্ত ফ্লাইট চালু করে। এটা ছিল তখন বিশ্বে সবচেয়ে দীর্ঘ বিমান রুট। ডিসি-৪ বিমান ব্যবহার করে ১৯৪৬ সালে ইউরোপের প্রথম বিমান সংস্থা হিসেবে তারা ফ্লাইট পাঠায় নিউ ইয়র্কে। যাত্রার সঙ্গে সঙ্গে এই সংস্থায় আধুনিকায়ন অব্যাহত গতিতে চলতে থাকে।

এভিয়াঙ্কা: প্রতিষ্ঠা হয় ১৯১৯ সালে। ওই বছরেই তারা প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা করে। ২০২২ সাল পর্যন্ত পরিবহন করেছে ২ কোটি ৪৬ লাখ যাত্রী। কলম্বিয়ার বারাঙ্কুইলাতে জার্মান অভিবাসীরা এটি প্রতিষ্ঠা করেন। এর অরিজিনাল নাম ছিল এসসিএডিটিএ। তারা এফ১৩ বিমান ব্যবহার করে। ১৯৩০ এর দশকের শেষের দিকে পৃথিবী যখন যুদ্ধের কাছাকাছি পৌঁছে যায় তখন এই বিমান সংস্থা মার্কিন সরকারের উদ্বেগের কারণ হয়ে ওঠে। কারণ, জার্মানির সঙ্গে এর সংযোগের ফলে নিরাপত্তা উদ্বেগ ছিল তাদের।

পরবর্তীতে এই বিমান সংস্থায় নিয়ন্ত্রণের অধিকার অর্জন করে প্যান আমেরিকান ওয়ার্ল্ড এয়ারওয়েজ। ১৯৪৯ সালে এসসিএটিডিটিএ কলম্বিয়ান বিমান সংস্থা এসএসিও’র সঙ্গে মিশে যায় এবং বর্তমানের নাম ধারণ করে। বর্তমানে প্রতিবেশী দেশগুলোতে বেশ কিছু বিমান সংস্থা থাকলেও লাতিন আমেরিকায় সবচেয়ে বড় বিমান সংস্থাগুলোর অন্যতম এভিয়াঙ্কা। এতে আছে কমপক্ষে ১৩০টি বিমান।

কোয়ান্টাস: এই বিমান সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২০ সালে। ২০২২ সাল পর্যন্ত তারা পরিবহন করেছে ২ কোটি ১৩ লাখ যাত্রী। অস্ট্রেলিয়ার বাইরের খুব কম মানুষই জানেন যে, ‘কুইন্সল্যান্ড অ্যান্ড নর্দান টেরিটোরি এরিয়েল সার্ভিসেস’-এর প্রতিটি শব্দের প্রথম অক্ষর নিয়ে কোয়ান্টাস শব্দটি গঠিত হয়েছে। এর নামই ইঙ্গিত দেয় যে, প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল  অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং বিক্ষিপ্তভাবে বসবাসকারী মানুষদের এলাকায় সেবা দেয়া। এর প্রথম বিমান ছিল একটি এভরো ৫০৪।

এটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগের একটি এমন বিমান যাতে একজনমাত্র পাইলট ও একজন যাত্রী আরোহণ করতে পারেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে কোয়ান্টাসকে জাতীয়করণ করে অস্ট্রেলিয়ান সরকার। ১৯৯০ এর দশকে আবার তা বেসরকারি হাতে ছেড়ে দেয়া হয়। বর্তমানে কোয়ান্টাস অস্ট্রেলিয়ার পতাকাবাহী মূল ক্যারিয়ার। একই সঙ্গে এটি সেখানকার সবচেয়ে বড় বিমান সংস্থা। বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত বিমান সংস্থার অন্যতম এটি।

এরোফ্লোট: ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠা হয় এই বিমান সংস্থার। একই বছরের জুলাই মাসে প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা করে। ২০২২ সাল পর্যন্ত তারা ২ কোটি ৫ লাখ যাত্রী পরিবহন করেছে। প্রথম ফ্লাইটে চারজন যাত্রী এবং দু’জন ক্রুকে নিয়ে মস্কো থেকে নিজনি নভগোরোডে যায় এফ-১৩ বিমান। এটিই পরে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পরে রাশিয়ার পতাকাবাহী বিমান হয়ে ওঠে।

অরিজিনালি এর নাম ছিল ডোবরোলেট। কিন্তু ১৯৩২ সালে নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম রাখা হয় এরোফ্লোট। এ সময় বেসামরিক সব বিমান সংস্থাকে একটিমাত্র এনটিটির অধীনে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন সরকার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমান সংস্থা হয়ে ওঠে এরোফ্লোট। কারণ, সোভিয়েত ইউনিয়ন তখন ছিল বিশাল এক এলাকা। এর বিভিন্ন অংশের সঙ্গে যোগাযোগে একমাত্র মাধ্যম হয়ে ওঠে আকাশপথে ভ্রমণ। ১৯৫৬ সালে এই বিমান সংস্থায় যুক্ত হয় টুপোলেভ টু-১০৪। সত্যিকারভাবে এটাকে সফল জেট এয়ারলাইনার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শীতল যুদ্ধের বছরগুলোতে এরোফ্লোট সবচেয়ে দূরপাল্লা ইল-৬২ পরিচালনা করে। তা কিউবা পর্যন্তু উড়ে যায়। সুপারসনিক টুপোলেভ টু-১৪৪ আরও গতি আনে সোভিয়েত বেসামরিক বিমান চলাচলে। একইভাবে ১৯৯০ এর দশকে এরোফ্লোটকে আলাদা করা হয়। বিভিন্ন আঞ্চলিক বিমান সংস্থায় বিভক্ত করা হয়। সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র তাদের নিজেদের মতো সার্ভিস শুরু করে। তখন এই বিমান সংস্থা রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে আসে এবং তার পর থেকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রয়েছে।

চেক এয়ারলাইন্স (সিএসএ): এই বিমান সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৩ সালে। একই বছরের অক্টোবরে তাদের প্রথম ফ্লাইট আকাশে ওড়ে। নব প্রতিষ্ঠিত চেকোস্লোভাকিয়ার জাতীয় বিমান সংস্থা হিসেবে এর যাত্রা শুরু। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাদের কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটে। যুদ্ধ পরবর্তী কমিউনিস্ট সরকার আবার এই বিমান সংস্থাকে পুনঃস্থাপন করে। বিওএসি এবং এরোফ্লোটের পর তৃতীয় বিমান সংস্থা হিসেবে ১৯৫৭ সালে তারা জেট এয়ালাইনার পরিচালনা করে। এ সময় তারা সোভিয়েতে প্রস্তুত টুপোলেপ টু-১০৪এ সার্ভিসে যুক্ত করে। শুধু প্রাগ থেকে মস্কো পর্যন্ত সংযুক্ত করে প্রথম জেট বিমান চালু করে তারা। শীতল যুদ্ধকালে সিএসএ উল্লেখযোগ্য বড় অপারেশন পরিচালনা করে।

এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল ২১টি দূরপাল্লার ইলুশিন ইল-৬২ বিমান। যুক্তরাষ্ট্র, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়া পর্যন্ত তাদের ছিল বিস্তৃত রুট। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত দুটি ঘটনা ঘটে যায়। প্রথমত বড় মাপে ছিনতাইয়ের শিকার হয় এই বিমান সংস্থা। পক্ষত্যাগীরা ১৯৫০ সালে তিনটি বিমানের গতিপথ পরিবর্তন করে নিয়ে যায় তখনকার পশ্চিম জার্মানিতে। ছিনতাইকারীদের হাতে একজন ক্যাপ্টেনকে প্রথম হারায় এই বিমান সংস্থা। সেটা ১৯৭০ এর দশকে। ২০২১ সালে বিমান সংস্থাটি দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর তাদের শততম বার্ষিকীর অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়।

ফিনএয়ার: প্রতিষ্ঠা হয় ১৯২৩ সালে। প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা করে পরের বছর মার্চে। ২০২২ সাল পর্যন্ত তারা ৯১ লাখ মানুষকে পরিবহন করেছে। শুরুর প্রথম ১২ বছরে তারা শুধু সামুদ্রিক বিমান হিসেবে পরিচালনা করে।

কারণ, ফিনল্যান্ডে আছে বহু হ্রদ এবং পানিপথ। ডিসি-১০ বিমান নিয়ে ইউরোপের প্রথম বিমান হিসেবে এই সংস্থার বিমান বিরতিহীনভাবে ১৯৮৩ সালে উড়ে যায় টোকিও। এর ৫ বছর পরে ইউরোপিয়ান একমাত্র বিমান হিসেবে ফিনএয়ার ইউরোপ ও চীনের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু করে।

ডেল্টা এয়ারলাইন্স: প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৪ সালে।  ২০২২ সাল পর্যন্ত তারা পরিবহন করেছে ১৪ কোটি ১৬ লাখ যাত্রীকে। ক্ষুদ্র পরিসর থেকে এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমান সংস্থার অন্যতম হয়ে উঠেছে।

দুটি গুরুত্বপূর্ণ করপোরেট সিদ্ধান্ত এই বিমান সংস্থাকে বৈশ্বিক এয়ারলাইন্সের শীর্ষ স্থানে উঠে আসতে সহায়তা করেছে। তা হলো প্যান অ্যামের ইস্ট কোস্ট এবং ১৯৯০-এর দশকের শুরুতে ইউরোপিয়ান রুট কিনে নেয়া। ২০০৮ সালে তারা নর্থইস্ট এয়ারলাইন্সের সঙ্গে মিলে যায়।

এয়ার সার্বিয়া: প্রতিষ্ঠা হয় ১৯২৭ সালে। ২০২২ সাল পর্যন্ত তারা পরিবহন করেছে ২৭ লাখ যাত্রী। বেশ কিছু বিমান সংস্থা থেকে যুগোস্লোভিয়ার জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা হয়ে ওঠে এয়ার সার্বিয়া। ১৯২৭ সালে এরোপুট এবং ১৯৪৮ সালে জ্যাট এয়ারওয়েজকে নিয়ে তাদের মিশন শুরু হয়। শীতল যুদ্ধের সময় জ্যাট উল্লেখযোগ্য রুট  ডেভেলপ করে।

পূর্ব এবং পশ্চিম থেকে সরঞ্জাম কেনে। এটা সম্ভব হয়েছে যুগোস্লোভিয়া জোট নিরপেক্ষ দেশ বলে। যুগোস্লোভিয়া ভেঙ যাওয়ার পর জ্যাট হয়ে ওঠে সার্বিয়ার পতাকাবাহী বিমান সংস্থা। ২০১৩ সালে এই কোম্পানির শতকরা ৪৯ ভাগ তারল্য স্কট কিনে নেয় ইতিহাদ। তারপর এয়ার সার্বিয়া নাম ধারণ করে তারা কাজ চালিয়ে যেতে থাকে।

আইবেরিয়া: ১৯২৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। একই বছর ডিসেম্বরে প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা করে। আগে এটি ছিল বেসরকারি কোম্পানি। তবে শুরুর পরপরই তা সরকারের স্পন্সরশিপের অধীনে যায়। মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মধ্যে পোস্টাল পরিবহন করতে থাকে। ১৯৩০ এর দশকের শুরুতে বিরতি দেয়। তারপর জার্মানির সহায়তায় পুনরুদ্ধার হয় স্পেনের গৃহযুদ্ধের সময়।

যুদ্ধের পর স্পেনের জাতীয় পতাকাবাহী বিমানে পরিণত হয় আইবেরিয়া। বর্তমানে এটি সরকারের হাতে রয়েছে। ১৯৪৬ সালে ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যে চলাচলকারী প্রথম এয়ারলাইন্স এটি। ২০০১ সালে এই বিমান সংস্থাকে বেসরকারি হাতে ছেড়ে দেয়া হয়। ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স গ্রুপ সৃষ্টিতে ২০১০ সালে সংস্থাটি বৃটিশ এয়ারওয়েজের সঙ্গে মিশে যায়।

বৃটিশ এয়ারওয়েজ: এটি বৃটেনের জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা। প্রতিষ্ঠা হয় ১৯১৯ সালে। একই বছর আগস্টে প্রথম ফ্লাইট আকাশে ওড়ে। ২০২২ সাল নাগাদ তারা ৪ কোটি ৪১ লাখ যাত্রী পরিবহন করেছে। বৃটিশ এয়ারওয়েজ নিয়ে খুব কমই বিতর্ক আছে।

চারটি কোম্পানি বৃটিশ ওভারসিস এয়ারওয়েজ করপোরেশন, বৃটিশ ইউরোপিয়ান এয়ারওয়েজ, কেমব্রিয়ান এয়ারওয়েজ এবং নর্থইস্ট এয়ারলাইন্স মিলে গঠন করা হয় এই বিমান সংস্থা। পূর্ববর্তী বিমান সংস্থাগুলোর শততম বার্ষিকী পালন করে তারা ২০১৯ সালে।

যখন এই বিমান সংস্থা চালু হয় তখন বর্তমানের আমস্টার্ডাম পরিচিত ছিল ডাচ্ ইস্ট ইন্ডিস নামে। সেই আমস্টার্ডামের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখে কেএলএম। এর প্রথম ফ্লাইটটি চালু হয় চার সিটের ডি হ্যাভিল্যান্ড ডিএইচ.১৬ বিমান দিয়ে।

উদ্বোধনী ফ্লাইট বর্তমানে অকার্যকর লন্ডনের ক্রাইডন বিমানবন্দরে এসেছিল। ১৯২৪ সালে কেএলএম আমস্টার্ডাম থেকে বাতাভিয়া (বর্তমানের জাকার্ত) পর্যন্ত ফ্লাইট চালু করে। এটা ছিল তখন বিশ্বে সবচেয়ে দীর্ঘ বিমান রুট। ডিসি-৪ বিমান ব্যবহার করে ১৯৪৬ সালে ইউরোপের প্রথম বিমান সংস্থা হিসেবে তারা ফ্লাইট পাঠায় নিউ ইয়র্কে। যাত্রার সঙ্গে সঙ্গে এই সংস্থায় আধুনিকায়ন অব্যাহত গতিতে চলতে থাকে।

এভিয়াঙ্কা: প্রতিষ্ঠা হয় ১৯১৯ সালে। ওই বছরেই তারা প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা করে। ২০২২ সাল পর্যন্ত পরিবহন করেছে ২ কোটি ৪৬ লাখ যাত্রী। কলম্বিয়ার বারাঙ্কুইলাতে জার্মান অভিবাসীরা এটি প্রতিষ্ঠা করেন। এর অরিজিনাল নাম ছিল এসসিএডিটিএ। তারা এফ১৩ বিমান ব্যবহার করে। ১৯৩০ এর দশকের শেষের দিকে পৃথিবী যখন যুদ্ধের কাছাকাছি পৌঁছে যায় তখন এই বিমান সংস্থা মার্কিন সরকারের উদ্বেগের কারণ হয়ে ওঠে। কারণ, জার্মানির সঙ্গে এর সংযোগের ফলে নিরাপত্তা উদ্বেগ ছিল তাদের।

পরবর্তীতে এই বিমান সংস্থায় নিয়ন্ত্রণের অধিকার অর্জন করে প্যান আমেরিকান ওয়ার্ল্ড এয়ারওয়েজ। ১৯৪৯ সালে এসসিএটিডিটিএ কলম্বিয়ান বিমান সংস্থা এসএসিও’র সঙ্গে মিশে যায় এবং বর্তমানের নাম ধারণ করে। বর্তমানে প্রতিবেশী দেশগুলোতে বেশ কিছু বিমান সংস্থা থাকলেও লাতিন আমেরিকায় সবচেয়ে বড় বিমান সংস্থাগুলোর অন্যতম এভিয়াঙ্কা। এতে আছে কমপক্ষে ১৩০টি বিমান।

 

কোয়ান্টাস: এই বিমান সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২০ সালে। ২০২২ সাল পর্যন্ত তারা পরিবহন করেছে ২ কোটি ১৩ লাখ যাত্রী। অস্ট্রেলিয়ার বাইরের খুব কম মানুষই জানেন যে, ‘কুইন্সল্যান্ড অ্যান্ড নর্দান টেরিটোরি এরিয়েল সার্ভিসেস’-এর প্রতিটি শব্দের প্রথম অক্ষর নিয়ে কোয়ান্টাস শব্দটি গঠিত হয়েছে। এর নামই ইঙ্গিত দেয় যে, প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল  অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং বিক্ষিপ্তভাবে বসবাসকারী মানুষদের এলাকায় সেবা দেয়া। এর প্রথম বিমান ছিল একটি এভরো ৫০৪।

এটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগের একটি এমন বিমান যাতে একজনমাত্র পাইলট ও একজন যাত্রী আরোহণ করতে পারেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে কোয়ান্টাসকে জাতীয়করণ করে অস্ট্রেলিয়ান সরকার। ১৯৯০ এর দশকে আবার তা বেসরকারি হাতে ছেড়ে দেয়া হয়। বর্তমানে কোয়ান্টাস অস্ট্রেলিয়ার পতাকাবাহী মূল ক্যারিয়ার। একই সঙ্গে এটি সেখানকার সবচেয়ে বড় বিমান সংস্থা। বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত বিমান সংস্থার অন্যতম এটি।

এরোফ্লোট: ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠা হয় এই বিমান সংস্থার। একই বছরের জুলাই মাসে প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা করে। ২০২২ সাল পর্যন্ত তারা ২ কোটি ৫ লাখ যাত্রী পরিবহন করেছে। প্রথম ফ্লাইটে চারজন যাত্রী এবং দু’জন ক্রুকে নিয়ে মস্কো থেকে নিজনি নভগোরোডে যায় এফ-১৩ বিমান। এটিই পরে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পরে রাশিয়ার পতাকাবাহী বিমান হয়ে ওঠে।

অরিজিনালি এর নাম ছিল ডোবরোলেট। কিন্তু ১৯৩২ সালে নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম রাখা হয় এরোফ্লোট। এ সময় বেসামরিক সব বিমান সংস্থাকে একটিমাত্র এনটিটির অধীনে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন সরকার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমান সংস্থা হয়ে ওঠে এরোফ্লোট। কারণ, সোভিয়েত ইউনিয়ন তখন ছিল বিশাল এক এলাকা। এর বিভিন্ন অংশের সঙ্গে যোগাযোগে একমাত্র মাধ্যম হয়ে ওঠে আকাশপথে ভ্রমণ। ১৯৫৬ সালে এই বিমান সংস্থায় যুক্ত হয় টুপোলেভ টু-১০৪। সত্যিকারভাবে এটাকে সফল জেট এয়ারলাইনার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শীতল যুদ্ধের বছরগুলোতে এরোফ্লোট সবচেয়ে দূরপাল্লা ইল-৬২ পরিচালনা করে। তা কিউবা পর্যন্তু উড়ে যায়। সুপারসনিক টুপোলেভ টু-১৪৪ আরও গতি আনে সোভিয়েত বেসামরিক বিমান চলাচলে। একইভাবে ১৯৯০ এর দশকে এরোফ্লোটকে আলাদা করা হয়। বিভিন্ন আঞ্চলিক বিমান সংস্থায় বিভক্ত করা হয়। সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র তাদের নিজেদের মতো সার্ভিস শুরু করে। তখন এই বিমান সংস্থা রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে আসে এবং তার পর থেকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রয়েছে।

চেক এয়ারলাইন্স (সিএসএ): এই বিমান সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৩ সালে। একই বছরের অক্টোবরে তাদের প্রথম ফ্লাইট আকাশে ওড়ে। নব প্রতিষ্ঠিত চেকোস্লোভাকিয়ার জাতীয় বিমান সংস্থা হিসেবে এর যাত্রা শুরু। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাদের কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটে। যুদ্ধ পরবর্তী কমিউনিস্ট সরকার আবার এই বিমান সংস্থাকে পুনঃস্থাপন করে। বিওএসি এবং এরোফ্লোটের পর তৃতীয় বিমান সংস্থা হিসেবে ১৯৫৭ সালে তারা জেট এয়ালাইনার পরিচালনা করে। এ সময় তারা সোভিয়েতে প্রস্তুত টুপোলেপ টু-১০৪এ সার্ভিসে যুক্ত করে। শুধু প্রাগ থেকে মস্কো পর্যন্ত সংযুক্ত করে প্রথম জেট বিমান চালু করে তারা। শীতল যুদ্ধকালে সিএসএ উল্লেখযোগ্য বড় অপারেশন পরিচালনা করে।

এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল ২১টি দূরপাল্লার ইলুশিন ইল-৬২ বিমান। যুক্তরাষ্ট্র, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়া পর্যন্ত তাদের ছিল বিস্তৃত রুট। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত দুটি ঘটনা ঘটে যায়। প্রথমত বড় মাপে ছিনতাইয়ের শিকার হয় এই বিমান সংস্থা। পক্ষত্যাগীরা ১৯৫০ সালে তিনটি বিমানের গতিপথ পরিবর্তন করে নিয়ে যায় তখনকার পশ্চিম জার্মানিতে। ছিনতাইকারীদের হাতে একজন ক্যাপ্টেনকে প্রথম হারায় এই বিমান সংস্থা। সেটা ১৯৭০ এর দশকে। ২০২১ সালে বিমান সংস্থাটি দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর তাদের শততম বার্ষিকীর অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়।

ফিনএয়ার: প্রতিষ্ঠা হয় ১৯২৩ সালে। প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা করে পরের বছর মার্চে। ২০২২ সাল পর্যন্ত তারা ৯১ লাখ মানুষকে পরিবহন করেছে। শুরুর প্রথম ১২ বছরে তারা শুধু সামুদ্রিক বিমান হিসেবে পরিচালনা করে।

কারণ, ফিনল্যান্ডে আছে বহু হ্রদ এবং পানিপথ। ডিসি-১০ বিমান নিয়ে ইউরোপের প্রথম বিমান হিসেবে এই সংস্থার বিমান বিরতিহীনভাবে ১৯৮৩ সালে উড়ে যায় টোকিও। এর ৫ বছর পরে ইউরোপিয়ান একমাত্র বিমান হিসেবে ফিনএয়ার ইউরোপ ও চীনের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু করে।

ডেল্টা এয়ারলাইন্স: প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৪ সালে।  ২০২২ সাল পর্যন্ত তারা পরিবহন করেছে ১৪ কোটি ১৬ লাখ যাত্রীকে। ক্ষুদ্র পরিসর থেকে এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমান সংস্থার অন্যতম হয়ে উঠেছে।

দুটি গুরুত্বপূর্ণ করপোরেট সিদ্ধান্ত এই বিমান সংস্থাকে বৈশ্বিক এয়ারলাইন্সের শীর্ষ স্থানে উঠে আসতে সহায়তা করেছে। তা হলো প্যান অ্যামের ইস্ট কোস্ট এবং ১৯৯০-এর দশকের শুরুতে ইউরোপিয়ান রুট কিনে নেয়া। ২০০৮ সালে তারা নর্থইস্ট এয়ারলাইন্সের সঙ্গে মিলে যায়।

এয়ার সার্বিয়া: প্রতিষ্ঠা হয় ১৯২৭ সালে। ২০২২ সাল পর্যন্ত তারা পরিবহন করেছে ২৭ লাখ যাত্রী। বেশ কিছু বিমান সংস্থা থেকে যুগোস্লোভিয়ার জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা হয়ে ওঠে এয়ার সার্বিয়া। ১৯২৭ সালে এরোপুট এবং ১৯৪৮ সালে জ্যাট এয়ারওয়েজকে নিয়ে তাদের মিশন শুরু হয়। শীতল যুদ্ধের সময় জ্যাট উল্লেখযোগ্য রুট  ডেভেলপ করে।

পূর্ব এবং পশ্চিম থেকে সরঞ্জাম কেনে। এটা সম্ভব হয়েছে যুগোস্লোভিয়া জোট নিরপেক্ষ দেশ বলে। যুগোস্লোভিয়া ভেঙ যাওয়ার পর জ্যাট হয়ে ওঠে সার্বিয়ার পতাকাবাহী বিমান সংস্থা। ২০১৩ সালে এই কোম্পানির শতকরা ৪৯ ভাগ তারল্য স্কট কিনে নেয় ইতিহাদ। তারপর এয়ার সার্বিয়া নাম ধারণ করে তারা কাজ চালিয়ে যেতে থাকে।

আইবেরিয়া: ১৯২৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। একই বছর ডিসেম্বরে প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা করে। আগে এটি ছিল বেসরকারি কোম্পানি। তবে শুরুর পরপরই তা সরকারের স্পন্সরশিপের অধীনে যায়। মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মধ্যে পোস্টাল পরিবহন করতে থাকে। ১৯৩০ এর দশকের শুরুতে বিরতি দেয়। তারপর জার্মানির সহায়তায় পুনরুদ্ধার হয় স্পেনের গৃহযুদ্ধের সময়।

যুদ্ধের পর স্পেনের জাতীয় পতাকাবাহী বিমানে পরিণত হয় আইবেরিয়া। বর্তমানে এটি সরকারের হাতে রয়েছে। ১৯৪৬ সালে ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যে চলাচলকারী প্রথম এয়ারলাইন্স এটি। ২০০১ সালে এই বিমান সংস্থাকে বেসরকারি হাতে ছেড়ে দেয়া হয়। ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স গ্রুপ সৃষ্টিতে ২০১০ সালে সংস্থাটি বৃটিশ এয়ারওয়েজের সঙ্গে মিশে যায়।

বৃটিশ এয়ারওয়েজ: এটি বৃটেনের জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা। প্রতিষ্ঠা হয় ১৯১৯ সালে। একই বছর আগস্টে প্রথম ফ্লাইট আকাশে ওড়ে। ২০২২ সাল নাগাদ তারা ৪ কোটি ৪১ লাখ যাত্রী পরিবহন করেছে। বৃটিশ এয়ারওয়েজ নিয়ে খুব কমই বিতর্ক আছে।

চারটি কোম্পানি বৃটিশ ওভারসিস এয়ারওয়েজ করপোরেশন, বৃটিশ ইউরোপিয়ান এয়ারওয়েজ, কেমব্রিয়ান এয়ারওয়েজ এবং নর্থইস্ট এয়ারলাইন্স মিলে গঠন করা হয় এই বিমান সংস্থা। পূর্ববর্তী বিমান সংস্থাগুলোর শততম বার্ষিকী পালন করে তারা ২০১৯ সালে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।