ঢাকাশনিবার , ৮ অক্টোবর ২০২২
  1. #টপ৯
  2. #লিড
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. আন্দোলন
  7. ইচ্ছেডানা
  8. উদ্যোক্তা
  9. ক‌রোনা মহামা‌রি
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. চাকুরীর খবর
  15. জাতীয়
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ভয়ংকর হ‌য়ে উঠ‌ছে কি‌শোর গ্যাং

দেশইনে‌ফো ডেস্ক।
অক্টোবর ৮, ২০২২ ৯:৪৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

দেশব্যাপী পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে: আইজিপি

তারা কিশোর বয়সে ভয়ংকর হয়ে উঠছে। তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযান অব্যাহত থাকবে: র‍্যাব ডিজি

সময় থাকতে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ না করলে আরো বিপজ্জনক হয়ে উঠবে: অধ্যাপক জিয়াউর রহমান
আবুল খায়ের

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে এক স্কুল শিক্ষার্থীকে উত্যক্ত করত কিশোর গ্যাং নেতা মেহেদী। প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে বুধবার ওই ছাত্রকে অপহরণ করে নিয়ে যায় সে। পরদিন গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে মেহেদীকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। উদ্ধার করা হয় ভিকটিমকেও।

শুধু অপহরণই নয়, হত্যা, চাঁদাবাজিসহ এমন কোন অপরাধ নেই যাতে জড়িয়ে পড়ছে না কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এদের বেপরোয়া চলাফেরা ও আচরণ কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দিনের পর দিন কিশোর গ্যাংয়ের বেপরোয়া কর্মকান্ড ভাবিয়ে তুলছে সংশ্লিষ্ট এলাকার অধিবাসী ও অভিভাবকদেরকে। গ্যাংয়ের সদস্যদের আচরণ এতটাই বেপরোয়া যে তাদের কেউ কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না। এলাকার বড় ভাইদের প্রভাব বলয়ে থেকে এরা গুরুতর অপরাধ কর্মকান্ড সংঘটনে সিদ্ধহস্ত। কোন অপরাধ করার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতেও গ্রেফতার হচ্ছে অনেকে। কিন্তু তারপরও এদের দৌরাত্ম্য কমছে না।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা যারা অপরাধে জড়াচ্ছে তাদের বয়স ১৩ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। এরা যত বড় অপরাধই করুক না কেন তাদেরকে শিশু আইনে বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে। ওই আইনে হত্যাকান্ডের মত অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি দশ বছর। ফলে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা অপরাধ করে লুঘু শাস্তির আওতায় থাকছে। এজন্য শিশু অপরাধীদের বয়সসীমা কমিয়ে আনা যায় কিনা সেই বিষয়ে সরকারকে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। যদি শিশুর বয়সসীমা পুন:নির্ধারন না করা হয় তাহলে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।

গতকাল শুক্রবার র‍্যাব-৪ পল্লবীসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্যাংলিডারসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের নির্মম প্রহারে এসএসসি পরীক্ষার্থী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

কিশোর গ্যাংয়ের হাতে বৃহস্পতিবার খুন হয় ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় শান্ত রহমান নামে এক যুবক। সে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিল। বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে সমবয়সী কিশোররা তাকে পেটে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। কিশোর গ্যাংয়ের হাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও মারামারির মত ঘটনায় আতংক ছড়াচ্ছে জনগণের মধ্যে। ভাবিয়ে তুলছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকেও। এই গ্যাংয়ের সদস্যদের বেশভুষা, চলাফেরা ও কথা বলার ধরন দেখে তাদেরকে সহজেই অন্যদের থেকে পৃথক করে ফেলা যায়। তাদের নানা বেপরোয়া কর্মকান্ডে ভয়ে তটস্থ থাকে স্কুল ও কলেজগামী ছাত্রীরা। এরা সংঘবদ্ধভাবে মোটরসাইকেল চালিয়ে ও হর্ণ দিয়ে জনমনে আতংক সৃষ্টি করে চলেছে। এই গ্যাংয়ের সদস্যদের অনেকেই বাসায় শান্ত-শিষ্ট আচরণ করলেও ঘর থেকে বেরোনোর পর হয়ে পড়ে বেপরোয়া। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হারান। যথাসময়ে ব্যবস্থা না নেওয়ায় এরা নিজেদের আইনের উর্দ্ধে বলে মনে করেন।

এ প্রসঙ্গে পুলিশের আইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের কর্মকান্ড সমাজে বড় একটা সমস্যা হিসাবে দেখা দিয়েছে। এদের নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী পাড়া-মহল্লাসহ যেখানে তারা থাকবে সেখানেই অভিযান চালানো হবে। তাদেরকে কোন ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। আইনানুযায়ী সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, র‍্যাবের ডিজি থাকাকালে অনেক কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছি। অনেককে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।

র‍্যাব মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বয়স ১৮ বছরের নিচে। এদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হলে এ সংক্রান্ত আইনে সংশোধনী আনা দরকার। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বয়স কম থাকায় তাদেরকে লুঘ শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। ফলে এক ধরনের আইনি দুর্বলতার কারণে তারা অনেকটাই পার পেয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের নিয়ন্ত্রণে দেশব্যাপী অভিযান চালাবে র‍্যাব। এদেরকে যারা ইন্ধন দেয় তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

কিশোর গাংয়ের প্রধানরা অনেকটাই ‘ডন’ এর মত আচরণ করেন। পাড়া, মহল্লা, অলিগলি ও ফুটপাতে জড়ো হয়ে আড্ডা দেয়। উচ্চ স্বরে গান করে। মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। টিকটক করে নানাজনের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এগুলো নিয়ে তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মাদক ব্যবসা, মাদক সেবনের মত অপরাধ করে চলেছে। এই কিশোর গ্যাংগুলোকে নিয়ন্ত্রন করছে স্ব স্ব এলাকার বড় ভাই বা গডফাদার। পর্দার আড়ালে থেকে রাজনৈতিক পরিচয়ধারী এই গডফাদাররা কিশোর গ্যাং দিয়ে এলাকায় মাস্তানি, চাঁদাবাজি ও এলাকা নিয়ন্ত্রন থেকে শুরু করে খুনখারাপির ঘটনাও ঘটাচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের অধ্যাপক জিয়া রহমান বলেন, এখন তথ্য প্রযুক্তির যুগ। পশ্চিমা সমাজ ব্যবস্থার মত আমাদের সমাজ ব্যবস্থা পরিবর্তিত হচ্ছে। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিশোরদের গ্যাং কালচার গড়ে উঠেছে। ফলে তারা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এদের নিয়ন্ত্রণ করতে নানা সামাজিক কর্মকান্ডে তাদেরকে সম্পৃক্ত করতে হবে। যদি শুরুতেই নিয়ন্ত্রন করা না যায় তাহলে এরা ভবিষ্যতে আরো বড় সমস্যার সৃষ্টি করবে।

১৫ বছরে ১৩০ খুন: ঢাকার শিশু আদালতের বিচারিক কার্যক্রমের নথি অনুযায়ি গত ১৫ বছরে রাজধানীতে কিশোর গ্যাং কালচার ও সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে ১৩০ টি খুনের ঘটনা ঘটেছে।

নানা নামে কিশোর গ্যাং: র‍্যাবের পক্ষ থেকে রাজধানীতে সক্রিয় এলাকাভিত্তিক ৫০টি গ্যাংয়ের সুনির্দিষ্ট তালিকা করা হয়েছে। এই ৫০ টি গ্যাংয়ের ৫০ জন গডফাদার রয়েছে। নানা নামে এসব গ্যাং-এর নামকরণ করা হয়। এসব কিশোর গ্যাং এবং তাদের গডফাদারদের তালিকাও র‍্যাবের কাছে রয়েছে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, যশোর, রাজশাহী, রংপুর ও খুলনায় অর্ধশতাধিক কিশোর গ্যাং-এর তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এসেছে। তবে বাহিনীর কর্মকর্তাদের মতে, সারাদেশে প্রতি পাড়া-মহল্লায় এক বা একাধিক কিশোর গ্যাং রয়েছে। তাদের তালিকা করা হচ্ছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।