পটুয়াখালীতে নিখোঁজ থাকা ১২ বছরের এক শিশুর হদিস মিলেছে।
এ ঘটনায় একজনকে আটকের পর জানা গেছে, ধর্ষণের পর শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে নদী ফেলে দেওয়া হয়েছে।
শিশুটির বাবা মেয়ের পায়ের জুতা ও গায়ের ওড়না পেলেও এখনও লাশ খুঁজে পাননি। পরিবারসহ পুলিশ এখন লাশের খোঁজ করছে।
এর আগে শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পরে জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআন্ডা গ্রাম থেকে লামিয়া নামের ওই শিশুটি নিখোঁজ হয়।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, শিশুটির নিখোঁজের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আল আমিন (৩৫) নামে এক অটোরিকশার চালককে আটক করা হয়।
প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে তিনি শিশুটিকে ধর্ষণ ও শ্বাসরোধে হত্যা করে নদী ফেলে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
তবে সোমবার সকাল পর্যন্ত পর্যন্ত ওই নদীতে অভিযান চালিয়েও শিশুর লাশ উদ্ধার করা যায়নি।
জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার শিশুটি ২০২০ সালে চরআন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে দুই বছর পড়ালেখা থেকে বিরত ছিল।
শিশুটির পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার বিকেলে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরের সাগরপাড় বাজারে সে পণ্য কিনতে গিয়েছিল।
সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বাড়ির পথে রওনা দিয়ে সে নিখোঁজ হয়।
স্থানীয়রা জানায়, ওই শিশু নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর শনিবার দুপুরে চরআন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার একটি পুকুর পাড় থেকে তার পায়ের একটি জুতা আর বাজার থেকে কেনা পণ্য এবং খাল সংলগ্ন বিলের মাঝে তার গায়ের ওড়না পাওয়া যায়। উদ্ধার হওয়া ওই ওড়ানায় প্রচুর লালা দেখতে এলাকাবাসীসহ পরিবারের ধারণা হয় তাকে ধর্ষণের পর গুম করা হয়েছে।
স্থানীয়রা আরও জানায়, শিশুটি যেখান থেকে নিখোঁজ হয় সেখানেই দীর্ঘক্ষণ আল আমিনের অটোরিকশা দাঁড়িয়ে ছিল। তাই তাকে সন্দেহ হয়।
এরই মধ্যে পালিয়ে ছিল আল আমিন। তাই তাকে সহজে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরে শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে আলেকান্দা গ্রাম থেকে তাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
এদিকে, রোববার (৮ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় শিশু খুনে আল আমিনের ফাঁসির দাবিতে চরআন্ডা সাগরপাড় বাজারে মানববন্ধন করা হয়।
পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে চরআন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। বিদ্যালয় মাঠেও একটি মানববন্ধন হয়।
এসব কর্মসূচিতে শিশুটির পরিবার, এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
শিশুটির বাবা বলেন, আমি সাগরে ছিলাম। মেয়ে নিখোঁজের কথা শুনে আমি বাড়ি আসি।
এসে ওড়না পেয়েছি।
এরপর খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পাারি আল আমিন তাকে ধর্ষণ করে হত্যা করছে।
তারপর নদীতে ফেলে দিয়েছে। এখনও লাশ পাইনি। আমরা আল আমিনের ফাঁসি চাই।
এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার অফিসার ইনচার্জ নুরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, শিশুটিকে ধর্ষণ ও হত্যায় আল আমিনের বিরুদ্ধে রোববার রাতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শিশুটির লাশ উদ্ধারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নদী বড় হওয়ায় এখনও লাশ উদ্ধার করা যায়নি।