৪র্থ পর্ব….
ওদের সার্চ লাইটের আলো এসে বার বার আমাদের নৌকাতে পড়ছিল।
ঈশ্বরের কৃপায়-ওরা আর স্পীড বোট নিয়ে ধরতে এলোনা। আমরা বাহাদূরাবাদ ঘাট এলাকা অতিক্রম করলাম।
আমাদের সাথে চিড়া গুড় ছিল। ভোরে মাঝিরা এক কাইসা খেতের মধ্যে নৌকা ঢুকিয়ে দিল।
আমরা নীচে নেমে খেতের মধ্যে প্রস্রাব পায়খানা করলাম। আমাদের সাথে থাকা চিড়া ও গুড় দিয়ে সকালের জলখাবার খেলাম।
তার পর নৌকা আবার ছাড়লো। তখন কাজিপুর থানার অধিকাংশ এলাকা সহ বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকা পাকিস্তানি হানাদারদের দখলে।
কাজিপুর থানার সম্মুখ দিয়ে আমাদের নৌকা আসবে।
দেখে শুনে খোঁজ নিয়ে থামিয়ে থামিয়ে ৪ দিন ভরে নৌকা এসে পৌছালো সিরাজগঞ্জ হানাদার মুক্তাঞ্চল যমুনার চরে।
এটা ছিল টাঙ্গাইল জেলার সিংগুলির চড়ের নিকটবর্তী। নৌকাতেই রান্নার ব্যবস্থা ছিল।
মাঝিরা কোন রকমে ডালভাত অথবা খিচুরী রান্না করে আমাদের খাওয়াতো।
এই ভাবে খেয়ে না খেয়ে চলছিলাম। পরদিন রাতে যমুনা নদীর এপাড়ে চলে এলাম।
চলে এলাম বেলকুচি-কামারখন্দ নির্বাচনী এলাকার এম.এন.এ জনাব মো: আব্দুল মোমিন তালুকদারের গ্রামের বাড়িতে।
তিনি তখন বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর ভাই মো: রশিদ তালুকদার আমাদের থাকা খাওয়া ও অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতা করলেন।
অক্টোবর’৭১ মাসের মাঝা মাঝির আগ পযর্ন্ত আমাদের গ্রæপের মুক্তিযোদ্ধা সংখ্যা কম থাকায় সম্মূখ যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত কমান্ডার স্যার নেন নি।
কমান্ডার স্যারের কাছে জানলাম জনাব মো: আমির ভুলু এর গ্রুপ আমাদের এই এলাকাতেই আছেন।
নিজের স্মৃতি কথা লিখেছেন
-বীর মুক্তিযোদ্ধা দেবেশ চন্দ্র সান্যাল।